রান্নার চুলোয় কমলা রঙের আগুন দেখেছেন নিশ্চয়ই। কিন্তু রংধনু রঙের আগুন! তা কি আসলেই সম্ভব? শুধু সম্ভব নয়। এমন বর্ণিল আগুন তৈরি করতে পারবেন আপনি নিজেই! ব্যাপারটি আসলে বেশ সোজাও বটে।
ব্যাকইয়ার্ড সায়েন্টিস্ট নামের এক ইউটিউবার বাড়ির বিভিন্ন টুকিটাকি দিয়ে তৈরি করে ফেলেন এই রংধনু আগুন। এরপর সাধারণ স্প্রে বোতলের সাহায্যে তৈরি করে ফেলেন ফ্লেমথ্রোয়ার।
আগুনের রঙ এমন বিচিত্র হয় কী করে হয়? বিভিন্ন ধাতু পোড়ালে বিভিন্ন রঙের আগুন দেখা যায়। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে কোনো রাসায়নিকের মাঝে কি ধাতু আছে তা বের করতে পারেন গবেষকেরা। আর আপনি এই পদ্ধতিতে ঘরে বসেই করে ফেলতে পারেন এই এক্সপেরিমেন্ট।
উপকরণ:
পরীক্ষাটি শুরু করার আগে অবশ্যই দরকার হবে রাবার গ্লাভস, ল্যাব কোট, মুখে পরার মাস্ক এবং চোখ রক্ষার গগলস। বিভিন্ন ধরণের রাসায়নিক থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য এসব উপাদা অবশ্যই দরকার। এর পাশাপাশি এই এক্সপেরিমেন্টে যেহেতু আগুন নিয়ে কাজ করা হবে সুতরাং নিজের পরিবারের কোনো সদস্য অথবা কোনো বন্ধুকে সাথে রাখুন যে বিপদে সাহায্য করতে পারবে। এক্সপেরিমেন্ট করুন খোলা কোনো জায়গায়, ঘরের ভেতর নয়। আগুন নেভানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকলে ভালো হয়। এ ছাড়াও দরকারি উপকরণগুলো হলো:
- – কাঁচের বড় পাত্র
- – কয়েকটি খালি স্প্রে বোতল
- – চামচ
- – আগুন ধরানোর জন্য ম্যাচ
- – প্রয়োজনীয় রাসায়নিক
মিথানল-
লাইটারের ফুয়েল হিসেবে মিথানলের কৌটা কিনতে পাওয়া যায়। কেনার সময়ে লক্ষ্য করবেন তা আসলেই মিথানল কি না। জ্বালানী হিসেবে এই এক্সপেরিমেন্টে মিথানল ব্যবহার করা হবে। এর ফলে রঙগুলো উজ্জ্বল হবে। তা ছাড়া মিথানল পোড়ার সময়ে উজ্জ্বল নীল রঙ তৈরি করে, সেটাও কাজে আসবে।
লিথিয়াম ব্যাটারি-
এই ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে এনারজাইজার ব্র্যান্ডের ব্যাটারি। ব্যাটারিটা কেটে এর ভেতর থেকে লিথিয়ামের ফয়েলটি বের করে নিতে হবে। এরপর একটি পাত্রে মিথানলের সাথে মিশিয়ে আলাদা করে রাখুন। লিথিয়াম লাল রঙের আগুন তৈরি করে।
ক্যালসিয়াম কার্বোনেট-
একটি পাত্রে মিথানলের সাথে কয়েক চা চামচ ক্যালসিয়াম কার্বোনেট যোগ করুন। এরপর এই পাত্রটি আলাদা করে রাখুন। এই উপাদানটি কমলা রঙের আলো তৈরি করে।
লবণ-
মিথানলে সাধারণ খাওয়ার লবণ কয়েক চামচ মিশিয়ে দিয়ে পাত্রটি আলাদা করে রাখতে হবে। এই মিশ্রণ উজ্জ্বল হলুদ আলো তৈরি করে।
বোরিক পাউডার-
তেলাপোকা মারার জন্য বোরিক পাউডার ব্যবহার করেন অনেকেই। মিথানলে কয়েক চামচ বোরিক পাউডার মিশিয়ে পাত্রটি আলদা করে রাখুন। এই মিশ্রণ তৈরি করবে সবুজ রঙের আগুন।
পটাশিয়াম ক্লোরাইড-
এই উপাদানটি খুঁজে পেতে হয়তো একটু খোঁজাখুঁজি করতে হতে পারে আপনার। পটাশিয়াম ক্লোরাইড আগের মতোই মিথানলে যোগ করে রাখুন। এই মিশ্রণ থেকে পাওয়া যাবে বেগুনী আগুন।
প্রণালী:
- – প্রথমে আলাদা আলাদা মিশ্রণগুলো আলাদা আলাদা স্প্রে বোতলে ভরে নিন এবং কোনটি থেকে কি রঙ পাওয়া যাবে তা লেবেল করে রাখুন।
- – এরপর সাবধানে একটা ম্যাচের কাঠি জ্বালিয়ে আপনার শরীর থেকে দূরে ধরুন ও স্প্রে বোতল থেকে মিশ্রণ স্প্রে করুন এর ওপরে। চমৎকার উজ্জ্বল আগুন দেখতে পাবেন।
- – এতো বিপজ্জনক কিছু করতে না চাইলে কাঁচের একটি ছোট প্লেটে কিছুটা মিশ্রণ নিয়ে লম্বা একটি কাঠির সাহায্যে এতে আগুন দিয়ে দেখতে পারেন। একইভাবে রঙ্গিন আগুন তৈরি হবে।