মুন্সিগঞ্জ, ২৩ মে ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি গোলজার হোসেনের উপর হামলার মামলায় গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দি ইউপির বহিস্কৃত চেয়ারম্যান মনিরুল হকের জামিন দ্বিতীয় দফায় নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে হাজতে থাকা মনিরুল হকের জামিন আবেদন করলে মুন্সিগঞ্জ আমলি আদালত-৫ এর বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
আসামি পক্ষের একাধিক আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন। বাদিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ব ম শামীম। দুইপক্ষ তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। পরে আজ বিকেলে ওই শুনানির আদেশে আসামির জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ফলে কারাগারেই থাকছেন মনিরুল হক।
এর আগে গত রোববার (১৯ মে) দুপুরে পুলিশের উপর হামলা মামলায় জেল হাজতে থাকা মনিরুল হক মিঠুকে সাংবাদিক গোলজার হোসেনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলে পুলিশ। শুনানি শেষে পর্যালোচনা করে জামিন নামঞ্জুর করে একদিনের জন্য জেল গেটে এনে জিঙ্গাসাবাদের আদেশ দেন বিচারক। পরে জেলগেটে একদিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুনরায় আজ বৃহস্পতিবার আসামির জামিন আবেদন করলে তার জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদি পক্ষের আইনজীবী ব ম শামীম বলেণ, ভুক্তভোগী সাংবাদিক গোলজার হোসেন মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি। অভিযুক্ত মনিরুল হক উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীকের প্রার্থী এবং উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আমিরুল হকের পক্ষের হয়ে কাজ করছিলেন। গত ৮ মে প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে নির্বাচনে হোসেন্দি ইউনিয়ন পরিষদের বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান মনিরুল হক, তাঁর ভাই গাজীপুর আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইকবাল হক স্বপন ও ভাতিজা তানভীর হক তুরিন ওই ইউনিয়নের ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করতে কেন্দ্রের বাইরে জড়ো হন। সে সময় ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্য সোহেল রানাকে মনিরুল হকের নির্দেশে মারধর করেন তাঁর ভাতিজা তানভীর এবং তাঁদের লোকজন।
ওই ঘটনার সময় পাশ থেকে ছবি ও ভিডিও করছিলেন গোলজার হোসেন। পরে তাঁরা গোলজারের ওপর হামলা করেন। তাঁর মুঠোফোন, পকেটে থাকা টাকা, আইডি ও পর্যবেক্ষক কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করতে থাকেন। অন্য সাংবাদিকেরা এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। পরে সাংবাদিকেরা ভোটকেন্দ্রের ভেতর আশ্রয় নেন। সেখানে তাঁদের মারধরের জন্য তেড়ে আসেন মনিরুল হক, তাঁর ভাই ইকবাল হকসহ তাদের লোকজন। সাংবাদিকদের হত্যা ও হাত-পা কেটে ফেলার হুমকি দেন তারা।
এ ঘটনায় পর দিন বৃহস্পতিবার রাতে ইউপি চেয়ারম্যান মিঠুকে প্রধান করে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন সাংবাদিক গোলজার হোসেন।