২৮ আগস্ট বিয়ের পিঁড়িতে বসেন টেলিভিশন তারকা সুমাইয়া শিমু। স্বামীর নাম নজরুল ইসলাম। তিনি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা রিলিফ ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত আছেন। বিয়ে এবং অন্যান্য প্রসঙ্গে প্রিয়.কমের সঙ্গে কথা হয় এ অভিনেত্রীর।
২৯ আগস্ট। দুপুর। সুমাইয়া শিমুর ব্যক্তিগত নম্বরে কয়েকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তাকে এসএমএস করার পর ফোন ধরে বলেন, ‘ভাইয়া জানেনই তো বিয়ের সময়টা কতটা ব্যস্ত থাকতে হয়। আপনি আমাকে বিকেলে ফোন করেন প্লিজ।’
যেই কথা সেই কাজ। শিমুর কথা মেনে বিকেলেই তাকে ফোন করা হলো। প্রথমবার রিং হবার পর ফোন ধরেননি। দ্বিতীয়বার ফোন রিসিভ করেন এ অভিনেত্রী। আর ফোন ধরেই বলেন, ‘খুব বেশি সময় দিতে পারবো না। কি বলবেন বলেন।’
প্রিয়: প্রথমমত প্রিয়.কমের পক্ষ থেকে আপনাকে অনেক শুভ কামনা জানাই নতুন জীবনের জন্য…
শিমু: থ্যাংকু…
: আজ [২৯ আগস্ট] তো আপনাদের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা…
শিমু: হ্যাঁ, সে কারণেই অনেক ব্যস্ত আছি। বাড়ি ভরা গেস্ট। পার্লারে যেতে হবে। নিজের প্রস্তুতি নিতে হবে। কত কাজ বাকি এখনো।
প্রিয়: পর্দায় চরিত্রের কারণেই বহুবার বউ সাজতে হয়েছে। বাস্তবে প্রথমবার বউ সাজলেন…অনভূতিটা নিশ্চয়ই আলাদা…
শিমু: অবশ্যই আলাদা। নারী-পুরুষের জীবনের বড় একটি ঘটনা বিয়ে। এটা বলে বোঝানো যাবে না।
প্রিয়: গত রোজার ঈদের পর আংটি বদল করেছেন। কিন্তু এতদিন বিষয়টা গোপনই ছিল…
শিমু: ইচ্ছে করেই তো গোপন করিনি। নিউজ হয়নি তাই কি গোপন বলছেন? আসলে আমার আংটি বদলের সংবাদ খবরের কাগজে আসুক এটা চাইনি।
প্রিয়: আপনার জীবন সঙ্গী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে মূল্যায়ন জানতে চাই…
শিমু: এখনই মূল্যায়ন করাটা একটু কঠিন হয়ে যাবে না? আরো কিছুদিন যাক সংসার করি তারপর প্রকৃত মূল্যায়ন করতে পারবো। তবে নজরুল মানুষ হিসেবে খুবই ভালো। তার সঙ্গে বাকিটা জীবন কাটিয়ে দিতে পারবো এটুকু বলতে পারি।
প্রিয়: বিয়ের আগে কি তার সঙ্গে আপনার আলাপ ছিল…
শিমু: দেখুন আমি এর আগেও অনেক সাক্ষাৎকারে বলেছি, আমার বিয়ের পুরো বিষয়টা আমি আমার পরিবারের হাতে ছেড়ে দিয়েছি। এখনো একই কথা বলছি। আমার পরিবারের পছন্দের প্রতি সম্মান রেখে আমি বিয়ে করেছি। আর কোনো বাবা মা’ই চান না নিশ্চয়ই তার সন্তান অসুখি থাকুক। তারা যা করেছেন আমার ভালোর জন্যই করেছেন। একটু ফোনটা ধরবেন, আমাকে ডাকছে।
[বলে শিমু কোন একজনের ডাকে চলে গেলেন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর আবার ফিরে আসলেন তিনি।]
স্যারি, বুঝতেই পারছেন। বলুন…
প্রিয়: আমরা অনেক অভিনেত্রীকেই দেখেছি বিয়ের পর অভিনয় থেকে বিদায় নেন। কেউ কেউ আবার অভিনয় কমিয়ে দেন। এমনটা কি আপনার ক্ষেত্রেও ঘটবে…
শিমু: আপনি জানেন যে, আমি গত কয়েক বছর ধরে এমনিতেই অভিনয় কম করছি। তাই বলে আমি বিয়ে করে অভিনয়কে বিদায় জানাবো তা হবে না। তবে ভবিষ্যতের কথা এখনই বলতে পারছি না।
প্রিয়: হানিমুনে যাবার পরিকল্পনা…
শিমু: এখনই এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না।
প্রিয়: আপনি তো এখন বেশ কিছু ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করছেন…
শিমু: বেশ কিছু না। কয়েকটি ধারাবাহিক নাটকে কাজ করছি। এর মধ্যে, ‘একজন মায়াবতী’ ও ‘লেক ড্রাইভ লেন’ নাটক দুটির শুটিং করছি নিয়মিত। মাঝে মধ্যে কিছু একক নাটক ও টেলিফিল্মে কাজ করা হয়। আজ আর বেশি কথা না বলি। স্যারি, আরেকদিন বেশি করে কথা বলবো। আজ তাহলে রাখি…
প্রিয়: ওকে, আপনাকে ধন্যবাদ এ ব্যস্ততার মাঝে সময় দেওয়ার জন্য। আপনার নতুন জীবনের জন্য আবারো শুভ কামনা।
শিমু: থ্যাংকু, থ্যাংকু…
[বলে শিমু ফোনটা রেখে দিলেন…
এক নজরে শিমু
১৯৮০ সালের ৩০ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন সুমাইয়া শিমু। বৃষ রাশির এ জাতিকার পুরো নাম সুমাইয়া রহমান শিমুল। শিমু নড়াইলের মেয়ে। তিনি পরিবারের সবার ছোট। বড় বোন ও ভাইদের ইতিমধ্যে বিয়ে হয়ে গেছে। ২০০০ সালের দিকে তিনি একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজ শুরু করেছিলেন। সেখানেই সর্বপ্রথম একটি বিজ্ঞাপনে মডেল হন। এরপর থেকে নিয়মিত হন অভিনয়ে। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকার ও রাজনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে তিনি নাট্যকলা বিভাগে ‘অভিনয়ে নারীর শৈল্পিক ও আর্থ সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত’ বিষয়ে পিএইচডি করছেন। ‘স্বপ্নচূড়া’, ‘হাসউফুল’, ‘এফএনএফ’, ‘ললিতা’ ‘রেডিও চকলেট’ নাটকগুলো তাকে জনপ্রিয় করে তোলে দর্শক মহলে।