২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | রাত ১১:৪৭
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হবে ‘অতীশের ভিটা’
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

২১ তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হবে মুন্সিগঞ্জের প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব শ্রীজ্ঞান অতীশ দিপঙ্করের জীবনী ও দর্শন নিয়ে নির্মিত ‘অতীশের ভিটা’ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র।

উৎসবের চতুর্থ দিন ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে বিকেল ৫টা’য় বিনামূল্যে দর্শকদের জন্য ৩০ মিনিট সময়কালের এই প্রামাণ্যচিত্রটি প্রদর্শিত হবে।

প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘অতীশের ভিটা’ নির্মাণ করেছেন নির্তেশ সি দত্ত। প্রযোজনায় ছিলেন সাংবাদিক শহীদ-ই-হাসান তুহিন।

প্রযোজক শহীদ-ই-হাসান তুহিন বলেন, ‘অতীশের ভিটা’ চলচ্চিত্রটি ২০১৭ সালে নির্মাণ শুরু হয়। বাংলাদেশের বিক্রমপুর (মুন্সিগঞ্জ), ঢাকা, নওগাঁ, বগুড়া, কুমিল্লা ছাড়াও ভারতের বিহার প্রদেশের নালন্দা, ভাগলপুর (বিক্রমশিলা), বুদ্ধগয়া ও নেপালের কাঠমান্ডু, পোখরা, লুম্বিনীতে চলচ্চিত্রটি ধারণ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, অতীশ দীপঙ্কর বিষয়ে ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছে- প্রয়াত সংঘনায়ক শুদ্ধানন্দ মহাথের, ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া, অধ্যাপক ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, অধ্যাপক ড. সুফি মুস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক ড. রায়হান রাইন, অধ্যাপক শাহজাহান মিয়াসহ অতীশ বিষয়ে অভিজ্ঞ ও গবেষকদের।

শহীদ-ই-হাসান তুহিন আরও জানান, তিব্বত যাওয়ার পথে অতীশ দীপঙ্কর দুই বছর নেপাল অবস্থান করেন। নেপালের তখনকার রাজা অতীশের জন্য একটা বিহার নির্মাণ করে দেন। নেপালের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগিতায় আমরা প্রাচীন সেই বিহারটি খুঁজে পেতে সক্ষম হই। এছাড়া আমাদের দুইজন প্রতিনিধি ইন্দোনেশিয়ার ‘মুয়ারা জাম্বি’ টেম্পল তিব্বতের লাসায় অবস্থিত অতীশ দীপঙ্করের সমাধিস্থল ‘ইয়ানথাং’ টেম্পল পরিদর্শন করেন।

তুহিন বলেন, আমরা ২০১৯ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিক কাজ করতে পেরেছিলাম। তারপর কোভিড-১৯ চলে আসায় আমাদের আয়োজন সংক্ষিপ্ত হয়ে যায়। সংক্ষিপ্ত হলেও এই সংস্করণে অতীশ দীপঙ্করের পথচলার সাথে এই অঞ্চলের প্রাচীন রাজনীতি, ধর্ম, দর্শন ইত্যাদির সম্ভাব্য প্রত্নতাত্ত্বিক ছাপ পাওয়া যাবে।

প্রামাণ্যচিত্রটির পরিচালক নির্তেশ সি দত্ত জানান, বৌদ্ধ পণ্ডিত ও দার্শনিক শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্করের জার্নিটা ছিল ভারতবর্ষ থেকে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা, তারপর আবার ভারত ও পরে ভারত থেকে নেপাল হয়ে তিব্বত। ভারতের বিক্রমশিলা, ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা (সুবর্ণদ্বীপ) আর তিব্বতের লাসা অতীশ দীপঙ্করের জীবনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে। বিশেষভাবে তিব্বতি জনগণ অতীশকে জো-বো-রজে (Jo-bo-Rje) বা প্রভূ সম্মানে তাঁর বিশাল রচনাভাণ্ডারসহ সমস্তকিছু শ্রদ্ধার সাথে সংরক্ষণ করেন। সেখান থেকেই আমরা অতীশ দীপঙ্করের খোঁজ পাই।

তিনি আরও জানান, চট্টগ্রামের শ্রী শরৎচন্দ্র দাস ১৮৭৯ সালে তিব্বতের লাসায় ভ্রমনকালে প্রথম অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান নামের বাঙালি এই পণ্ডিতকে আবিষ্কার করেন এবং ১৮৯৩ সালে প্রকাশিত তাঁর ‘Indian Pandits in the Land of Snow’ গ্রন্থে অতীশ দীপঙ্করের বায়োগ্রাফি প্রকাশ করেন। অতীশের সময় থেকে ৯০০ বছর পরে শরৎচন্দ্র দাসের এই গ্রন্থ থেকেই আবার অতীশ সম্পর্কে জানার সুযোগ তৈরি হয়। এই প্রামাণ্যচিত্রের সূত্রপাতও সেখান থেকেই।

 

error: দুঃখিত!