গা হিম করা আবিস্কৃত একটা তথ্য গোটা ওয়েব দুনিয়াকে ঝাঁকি দিয়ে গেল। স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহারকারী যত সাবধানই হোন না কেন নিজের অবস্থান লুকিয়ে রাখতে পারবেন না।
স্মার্টফোন বা ল্যাপটপের ব্যাটারিতে কতটুকু চার্জ অবশিষ্ট আছে সে তথ্যকে কাজে লাগিয়ে ব্যবহারকারীর অবস্থান নির্ণয়সহ তার উপর অনলাইনে নজরদারি করা সম্ভব। অতি সম্প্রতি ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের চারজন গবেষক এই বিষয়টি প্রমাণ করেছেন।
-দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট
গবেষকগন বলছেন, ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব কনসোর্টিয়াম নির্ধারিত ওয়েবসাইট পড়ার ভাষা HTML5 এর একটি সফটওয়্যারকে কাজে লাগিয়ে ব্যবহারকারীর তথ্য বের করে সম্ভব হয়েছে।
HTML5 এ লেখা ওয়েবসাইট ও স্ক্রিপ্ট ব্যবহারকারীর স্মার্টফোট কতটুকু চার্জ আছে তা জানতে অনুমতি নেয় না। বিশেষভাবে লেখা স্ক্রিপ্ট থেকে অনুরোধ পেলে স্মার্টফোন থেকে তথ্য দেখানো শুরু করে। এই তথ্য কাজে লাগিয়ে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা ভেঙে ফেলা সম্ভব।
গবেষকগন সতর্ক করে বলেছেন, ব্যাটারি থেকে সংগৃহীত তথ্য অনলাইন ব্রাউজকারীকে নজরদারির জন্য ব্যবহার করা যায়। এর ফলে যারা ব্রাউজারে পরিচয় গোপন রেখে ব্রাউজ করেন তাদেরও সহজে বের করা সম্ভব। এমনকি তারা কোথায় অবস্থান করছেন সেটিও এর মাধ্যমে জানা যায়।
ওয়েবের মান নির্ধারণী প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব কনসোর্টিয়াম (ডব্লিউথ্রিসি) ওয়েবসাইটগুলোকে ব্যবহারকারীর অজান্তেই ব্যাটারি তথ্য জানার সুযোগ করে দেয়।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডব্লিউথ্রিসির দাবি, মোবাইল ডিভাইস থেকে অনলাইন ব্যবহারকারীকে নজরদারি করার জন্য এটা কোনো দরকারি তথ্য নয়। তবে গবেষকগন দাবি করেছেন, যখন স্মার্টফোনের চার্জের তথ্য যখন হাতিয়ে নেওয়া হয় তখন ওই ব্যবহারকারীকে নিখুঁতভাবে শনাক্ত করা সম্ভব। যদি ব্রাউজার কেস ও কুকি পরিষ্কার করা হয় কিংবা ভারচুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (VPN) ব্যবহার করে ব্রাউজ করা হয় তারপরও এই ঝুঁকি থেকে যায়।
HTML এর এই ফিচারটি অবশ্য সব ব্রাউজারে সমর্থন করে না। তবে Firefox, Chrome ও Opera এর মতো ব্রাউজারে এটি সমর্থন করে।
গবেষকগন বলছেন, এই সমস্যা থেকে মুক্তির পথ হচ্ছে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবকে(www) তাদের মান পরিবর্তন করতে হবে। আর তা না হলে ইন্টারনেটে থাকলেই ব্যবহারকারী যতই ইনকগনিটো বা প্রাইভেসি সুরক্ষা ব্যবহার করুন না কেন তাকে সহজে খুঁজে বের করা যাবে।
সূত্রঃ
-দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট
-দ্য গার্ডিয়ান