১৩ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রবিবার | রাত ৮:৩৭
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
ট্রিপল মার্ডার; খুনিদের পা জড়িয়ে ধরেও সাকিবকে বাঁচাতে পারেনি তার বাবা মা
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ২৫ মার্চ, ২০২১, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

গতকাল বুধবার (২৪ মার্চ) রাত ১১ টা। এমন সময় ফোন আসে সাকিবের বাবা রিকসা চালক বাচ্চু মিয়ার মোবাইলে। মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার উত্তর ইসলামপুর এলাকার গ্রাম্য মাদবর বিগত পৌরসভা নির্বাচনের কাউন্সিলর প্রার্থী আওলাদ হোসেন মিন্টু উত্তর ইসলামপুর গ্রামের জামাল ষ্টোর এর সামনে সাকিবের বাবাকে সাকিবকে নিয়ে হাজির হতে বলেন।
হাজির হওয়ার সাথে সাথে কিছু বলার আগেই প্রতিপক্ষের জামাল মিয়ার পায়ে ধরে মাফ চাইতে বলে নিহত আওলাদ হোসেন মিন্টু। মাফ চাওয়ার জন্য মাথা নিচু করে জামালের পায়ে হাত দেওয়ার সাথে সাথে মাথার পিছন দিকে রড দিয়ে বাড়ি মারে তাকে ঘাতক শামীম (৩০)। বাড়ি খেয়ে দৌড়ে পাশের জামাল ষ্টোরে ঢুকে সাকিব।
এ সময় সিহাব (২২) জনি (২০), সৌরভ (২০), অভি(১৮)  দোকান হতে টেনে বের করে সামনে এনে ছুড়ি দিয়ে পেটে একাধিক আঘাত করতে থাকে সাকিবকে। সাথে চলে কিল, ঘুসি লাথিও। সাকিবের মা রিণা বেগম ঘাতকদের পায়ে জড়িয়ে ধরে বলে বাবা ওকে ছেড়ে দাও আমরা ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু তারপরেও সাকিবকে না ছেড়ে সাকিবসহ তার মা রিনা বেগম ও বাচ্চু সর্দারের উপর চলে বর্বর নির্যাতন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী সামসু মিয়া।
পরে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে সাকিবের বাবা কাপড় পেচিঁয়ে ছেলের রক্ত নিবারনের চেষ্টা করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে নিয়ে রওনা হলে পথেই মৃত্যূ হয় সাকিবের। নিহত সাকিবের পিতা বাচ্চু মাদবর পেশায় একজন রিকসা চালক। ২ বোন ও একভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিলো সাকিব। রিকসা চালক বাচ্চু মিয়া শত কষ্টের মধ্যেও সবটুকু দিয়ে ছেলেকে শিক্ষিত করে তুলতে চেয়েছিলেন। সাকিব এবার মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলো।
সরেজমিনে সাকিবদের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, সাকিবের বোন সাথি আক্তার ও দাদি চন্দ্রবানু বিলাপ করছে।
সাকিবের বোন সাথি জানান, আমার বাবা রিকসা চালিয়ে আমার ভাইকে পড়াতো আর বলতো সাকিব একদিন বড় চাকরী করবো। তখন আর আমার রিকসা চালাইতো হইবো না। আমার মা বলতো সাবিক বড় হয়ে সরকারী চাকরী করবো আর তানাহলে ওরে বিদেশে ভালো রাষ্ট্রে পাঠামু আমাদের আর অভাব থাকবো না।
সাথি আরো জানায়, সাকিব চাইতো ব্যবসা করতে তখন আমি ওকে বলতাম এতো টাকা কই পাবি সাকিব বলতো পার্টনারে ব্যাবসা করমু।
সাকিবের দাদি চন্দ্র বানু জানান, সাকিবের কাছে আমি প্রায়ই চা খেতে চাইতাম। সাকিব আমায় বলতো অর্নাসটা পাশ করে নেই তোমাকে প্রতিদিন চা দিয়ে গোসল করাবো।
উল্লেখ্য, মুন্সিগঞ্জ শহরের উত্তর ইসলামপুর গ্রামে বুধবার রাতে ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে বিচার শালিশীর মধ্যে প্রতিপক্ষের হামলায় খুন হন সাকিব সহ ৩ জন।
error: দুঃখিত!