মুন্সিগঞ্জ, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের মোজাম্মেল হক হিরু। জাপান থেকে ফেরার পর নিজেকে স্বচ্ছল রাখার তাড়নায় শুরু করেন ফুল চাষ। হিরুর ফুল চাষ প্রথমে আলোর মুখ না দেখলেও এখন এই ফুল চাষই হিরুর একমাত্র সম্বল। মোজাম্মেল হক হিরু মুন্সিগঞ্জের মানুষের কাছে এখন সত্যিকারের হিরো।
মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলার সোনারং ইউনিয়নের পুরাপাড়া এলাকার জাপান ফেরত মোজাম্মেল হক হিরু ৪০ শতাংশ জমিতে চাষ করেছেন জারবেরা ফুলের। প্রথম দিকে শখের বসে হলেও এখন তা রুপ নিয়েছে পেশায়। বর্তমানে ২০ শতাংশ জমি থেকে দৈনিক ফুল পাচ্ছেন দেড় হাজারের মত।
জারবেরা ফুল বিক্রি করে প্রতিদিন ১ থেকে দেড় হাজার টাকা আয় তার। বাকি ২০ শতাংশ জমির ফুল ফোটা শুরু করলে এই আয় দাড়াবে দ্বিগুন হয়ে।
হিরুর জারবেরা ফুল বাগান পরিচর্যায় নিয়োজিত শ্রমিক শাহ আলম জানালেন, তিনি গত ৮ বৎসর যাবৎ হিরুর জারবেরা ফুল বাগানে কাজ করেন। গত ৮ বৎসর ধরেই তার ব্যবসা ভালো গেছে। তবে গেলো বছর করোনার সময় ফুলের দাম পাননি। সেসময় কিছুটা সমস্যা হয়েছিলো। এরপর আবার ঘুড়ে দাড়িয়েছেন তিনি।
শাহ আলম জানালেন, জৈব সার, টিএসপি, ইউরিয়া, পটাশ, কিটনাশক এবং প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১ বার পানি দেয়া গেলে ফুলের উৎপাদন ভালো হবে।
ভিডিও:
বিদেশ ফেরত মোজাম্মেল হক হিরু বলছেন, বিদেশ থেকে ফেরার পর কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। এরপর সাভারে ঘুরতে গিয়ে সেখানে নানা রকমের ফুল চাষ দেখলাম। সেখান থেকেই পরিকল্পনা করলাম ফুল চাষ শুরু করার। এরপর শুরুও করলাম। তবে প্রথমদিকে বড় অঙ্কের লোকসান হলো। এরপর আরও প্রশিক্ষণ নিলাম, জ্ঞান অর্জন করলাম। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। গত ১০ বৎসর এই পেশায় আছি।
বিদেশ ফেরত অভিবাসী কর্মীদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রাম (ওকাপ) মুন্সিগঞ্জের মাঠ কর্মকর্তা ইউজিন ম্রং বলেন, মুুন্সিগঞ্জের বিদেশ ফেরত যুবকদের জন্য বেকারত্ব দুরীকরণে সম্ভাবনা রয়েছে এই জারবেরা ফুল চাষের। এই ফুল চাষে লোকসানের আশঙ্কা খুবই কম। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সহ সরকারের যেসকল সংস্থা রয়েছে যারা বিদেশ ফেরতদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে কাজ করছে তাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে এ ধরনের উদ্যোক্তাদের পাশে যাতে তারা এগিয়ে আসে এবং তাদের ঋণ সহায়তা প্রদান করে। এতে করে আরও নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।