বাংলার নবাব সিরাজ-উদ্দৌলা নিয়ে এরই মধ্যে দুটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশে। তবে এবার এই ঐতিহাসিক চরিত্র দেখা যাবে ছোটপর্দায়। নবাব সিরাজ-উদ্দৌলাকে নিয়ে মেগা সিরিয়াল পরিচালনা করছেন ডায়েল খান। এতে মূল ভূমিকায় অভিনয় করছেন চিত্রনায়ক আশিক। এবারই প্রথম তিনি কোনো মেগাসিরিয়ালে কাজ করছেন।
নায়ক আশিক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘যেহেতু আমি অনেকগুলো চলচ্চিত্রে কাজ করছি, সে জন্য নাটকে সময় দিতে পারি না। আর যেহেতু সিনেমায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, তাই মেগা সিরিয়ালে কাজ করতে চাই না। তবে যখন শুনলাম নবাব সিরাজ-উদ্দৌলাকে নিয়ে নাটক হবে, তখন আর লোভ সামলাতে পারিনি। কারণ আমি মঞ্চে একাধিকবার নবাবের চরিত্রে অভিনয় করেছি। এই নাটকের জন্য আগামী ২৫ আগস্ট থেকে অনুশীলন শুরু করব। আগামী মাসেই শুরু হচ্ছে শুটিং।’
তিনি আরো জানান ,‘আমি ছোটবেলা থেকেই মঞ্চে অভিনয় করি। আমি যখন ক্লাস ফোরে পড়ি, তখন থেকে শুরু করে মাস্টার্স পর্যন্ত আমি আমার গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের স্থানীয় নাট্যদল থিয়েটার সার্কেলে কাজ করি। ছোটবেলা থেকে অভিনয়ের একটা নেশা আমাকে তাড়া করত। অভিনয়ের পাশাপাশি লেখালেখি করতাম, এখনো করছি। আশা করছি আমার চিত্রনাট্য নিয়ে নতুন কাজের ঘোষণা আসবে খুব তাড়াতাড়ি। ঢাকায় এসে নাগরিক সম্প্রদায়ে কাজ করেছি এক বছর। মঞ্চের প্রতি একটা বিশেষ টান থাকলেও এখন আর সময় দিতে পারি না।’
চলচ্চিত্র অভিনেতা আশিক চৌধুরী চলচ্চিত্রে অভিষিক্ত হন ‘দুটি মনের পাগলামী’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে। প্রথম চলচ্চিত্রের সফলতা তাঁকে আরো চলচ্চিত্রে কাজ করার সুযোগ এনে দেয়। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি আশিক চৌধুরী টিভি পর্দায় অভিনয় ও মডেলিং করেন। ২০০৯ সালে ‘পেপসোডেন্ট টুথ পাউডার’ বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হওয়ার মাধ্যমে আশিকের মিডিয়া ভুবনে অভিষেক ঘটে। তবে এর আগে তিনি ২০০৫ সালে ‘এটিএন তারকাদের তারকা’ ও ২০০৬ সালে এনটিভি আয়োজিত ‘সুপার হিরো সুপার হিরোইন’ রিয়েলিটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
পড়াশোনার জন্য মাঝে বিরতি টানার কারণে ২০০৯ সাল থেকে তাঁর নিয়মিত কাজ করা শুরু হয়। পেপসোডেন্টের বিজ্ঞাপনচিত্রের পর ওয়াল্টন মোবাইল, প্যারাসুট নারিকেল তেল, শরিফ মেলামাইনসহ বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনের কাজ করেন আশিক চৌধুরী।
আউয়াল রেজা পরিচালিত ‘ভাইরাস’ টেলিফিল্মে অভিনয়ের মাধ্যমে আশিক চৌধুরীর টেলিভিশনের অভিনয় পর্ব শুরু হয়েছিল। এরপর নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুলের ধারাবাহিক ‘তবুও জীবন’, দীপংকর দিপনের ‘প্রেম একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া’, ফেরদৌস রানার টেলিফিল্ম ‘আনন্দ’, দীপংকর দিপনের ‘কবির জন্য পাত্র খোঁজা হচ্ছে’, ইদ্রিস হায়দারের ধারাবাহিক ‘সেকেন্ড ইনিংক্স’, গৌতম কৌরির ‘কাচের ক্যানভাস’, দীপংকর দিপনের ‘ইন্টারোগেশন’, শাহীন সরকারের ধারাবাহিক ‘প্রথম প্রেম’, নাহিদ আহমেদ পিয়ালের ‘কনক’, আরিফ খানের ‘সিক্রেট সার্ভিস’ ইত্যাদি নাটক ও টেলিফিল্ম মিলিয়ে প্রায় ৩০টির মতো কাজ করেন আশিক। জুলহাস চৌধুরী পলাশের ‘দুটি মনের পাগলামি’ সিনেমার মাধ্যমে ঢাকাই সিনেমায় আমার নায়ক হিসেবে অভিষেক ঘটে। ত্রিভুজ প্রেমের গল্পের সিনেমাটিতে আশিকের সঙ্গে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছিলেন নূপুর। তবে এটা ছিল আশিক অভিনীত দ্বিতীয় সিনেমা। এর আগে ২০১০ সালে শেখ কামালের ‘পাটনি’ সিনেমায় অভিনয়ের কাজ শুরু হয়েছিল। সেই সিনেমার কাজটি পবরর্তীতে পরিচালক শেষ করতে পারেননি। এ ছাড়া ২০০৮ সালে জুনায়েত হালিমের সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ‘স্বপ্ন ও দুঃপ্নের কাল’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য নির্বাচিত হলেও সেই সিনেমাটিও নির্মাণ করা হয়নি।