কথিত আছে, ‘চাকরিজীবনে উন্নতি করতে চাইলে নাক মুখ গুঁজে কাজ করুন’। প্রচলিত এই কথাটি অনেকেই বিশ্বাস করেন এবং তা মেনে নিয়ে কাজ করতে থাকেন। আর জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলটি তখনই করেন। চাকরিজীবন চলাকালীন এমন কিছু ভুল অনেকেই অনুধাবন করতে পারেন না, যেগুলো সময় চলে যাওয়ার পর বুঝতে পারেন। জনপ্রিয় পেশাজীবীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম লিঙ্কডইন-এ লেখক এবং ব্যবসায়ী বার্নার্ড মার চাকরিজীবনের এমন ১০টি বিষয় তুলে ধরেছেন, যেগুলো অধিকাংশ মানুষ দেরিতে বুঝতে পারে। সে বিষয়গুলো পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
১। জীবন খুব ছোট
সমঝোতার জন্য জীবন খুব ছোট। আপনি জানেন না, আপনি কয়দিন বাঁচবেন। আজ শুধু টাকা কিংবা ক্যারিয়ারের প্রয়োজনে অপ্রিয় চাকরটি করে যাচ্ছেন। প্রতিনিয়ত অপমানিত হচ্ছেন আপনার বস এবং সহকর্মীর কাছ থেকে। বাস্তবতা হলো, এই চাকরিটি আপনাকে দুঃখ, কষ্ট ছাড়া আর কিছুই দিতে পারবে না। আপনি যদি এই রকম পরিস্থিতির মাঝে থাকেন, তবে সময় থাকতে সরে আসুন।
২। সামাজিক যোগাযোগ থেকে দূরে থাকা
অনেকেই মনে করেন সোশ্যাল মিডিয়া সময় নষ্ট করার জায়গা। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, সফলতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সোশ্যাল মিডিয়া। সোশ্যাল মিডিয়া আপনি সফল এবং বিচিত্র উভয় ধরনের মানুষ পাবেন, একইসাথে পাবেন নতুন নতুন অভিজ্ঞতা।
৩। স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব না দেওয়া
সফলতার পিছনে ছুটতে গিয়ে স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখেন না অনেকেই। যার ফলশ্রুতিতে বয়স হলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, প্রেসারসহ নানা রোগ দেখা দেয়। স্বাস্থ্যের চেয়ে বড় কিছু নেই। মনে রাখবেন, অর্থ, সফলতা কোনো কিছুই আপনার স্বাস্থ্যকে প্রতিস্থাপন করতে পারবে না।
৪। কম্পিউটারের মাঝে ডুবে থাকা
জীবনের সব আনন্দ কম্পিউটারের মাঝে খুঁজে পাবেন না। কম্পিউটারের বাইরে একটি জগৎ আছে। সেই জগৎটি দেখার চেষ্টা করুন, সময় চলে গেলে হয়তো সেই জগৎটা অদেখাই রয়ে যাবে।
৫। জ্ঞানের কোনো শেষ নেই
জ্ঞানের পরিধি অসীম। আধুনিক প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের যুগে এর পরিধি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করুন। এটি মস্তিষ্ক সচল রাখতে সাহায্য করবে। শেখা বন্ধ করে দেওয়ার সাথে সাথে আপনার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যাবে।
৬। বহুমুখীতা
আপনি যদি একটি বিষয় নিয়ে সারাক্ষণ কাজ করেন, কাজের পরিধি একটি জায়গায় সীমাবদ্ধ রাখেন, আপনি শুধু একটি ক্ষেত্রে পারদর্শী হবেন। কাজের অন্যান্য ক্ষেত্রগুলো অজানাই রয়ে যাবে।
৭। একতাই বল
আপনি একা হয়তো অনেক দূর যেতে পারবেন, কিন্তু একসাথে কাজ করলে তা দ্রুত অর্জন করা সম্ভব হবে। একসাথে সবাই মিলে কাজ করলে দেখবেন সবচেয়ে কঠিন পথটিও সহজ হয়ে গেছে। যেকোনো পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে টিম ওয়ার্কের বিকল্প নেই।
৮। উদ্বেগ কোনো কিছু সৃষ্টি করতে পারে না
উদ্বেগ, টেনশন কোনো কিছু অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারে না। এটি শুধু আপনার সময় নষ্ট করবে। তাই উদ্বিগ্ন না হয়ে ঠান্ডা মাথায় সমস্যা নিয়ে ভাবুন, দেখবেন আপনি অহেতুক চিন্তা করছেন।
৯। ব্যর্থতা মানে শেষ নয়
ব্যর্থতা মানে সব শেষ হয়ে যাওয়া নয়। প্রচলিত আছে ‘ব্যর্থতা সাফল্যের চাবিকাঠি’। ব্যর্থতাকে সুযোগ হিসেবে দেখুন। ব্যর্থতা থেকে শুরু করুন নতুন পথ চলা।
১০। গন্তব্যের মাঝে সুখকে আটকে রাখা
সুখ একটি চলমান প্রক্রিয়া, এটিকে কোনো একটি বিষয়ের মাঝে আটকে রাখবেন। চাকরি চলে গেলে জীবন থেকে সুখ চলে যাবে কিংবা ওজন হ্রাস করলে সম্পর্কের উন্নতি হবে, এমন ধারণা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। সুখী হওয়ার বিষয়টি আপনার ওপর নির্ভর করছে। সুখী হওয়াকে অভ্যাসে পরিণত করুন, দেখবেন সাফল্য থাকবে আপনার হাতের মুঠোয়।
সূত্র: লিঙ্কডইন