মুন্সিগঞ্জ, ৩০ আগস্ট ২০২৩, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের চর মুক্তারপুর এলাকায় প্রকাশ্য ছুরিকাঘাতে নিহত ব্যবসায়ী ফজল দেওয়ানকে হত্যা করা হয় গেল ২৪ জুলাই। এ ঘটনায় হুকুমদাতা হিসেবে নাম আসে স্থানীয় প্রভাবশালী শাহ আলম হাওলাদারের। বাদীপক্ষের অভিযোগ থাকলেও পুলিশ এ ঘটনায় প্রাথমিক অবস্থায় যে মারামারির মামলা রুজু করে তাতে শাহ আলমের নাম ছিলো না। পরে ওই মামলাটিকেই হত্যা মামলায় রুপান্তর করা হয়।
এ নিয়ে গত ১ আগস্ট মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে মামলা নিয়ে নানা অভিযোগ তোলে নিহত ফজল দেওয়ানের পরিবার। পরে পুলিশ মামলার চার্জশিটে শাহ আলম হাওলাদারের নাম অন্তর্ভুক্তির আশ্বাস দেয়।
ঘটনার পর বেশ কয়েকদিন শাহ আলম হাওলাদার এলাকাছাড়া থাকলেও পুনরায় এলাকায় ফিরে ফজল দেওয়ানের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে- এমন অভিযোগ করেছেন নিহত ফজল দেওয়ানের ছোট ভাই সিরাজুল হক। গতকাল মঙ্গলবার রাতে তিনি মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় এই অভিযোগ করেন। পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গেল ২৮ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে চর মুক্তারপুর এলাকার টংগিবাড়ী কোল্ড স্টোরেজের গেটের সামনে আমার কর্মচারী জাহাঙ্গীর (১৮) তেল বিক্রির নগদ ২ লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় স্থানীয় আলী আকবরের পুত্র শাহ আলম হাওলাদার (৪২), তারমিন হাওলাদার (২৮), জয়নালের পুত্র সোহাগ (৩০), ও আলী আকবরের পুত্র আল-আমিন (৩৫ লোহার রড, ধারালো ছুরি, রামদা, পিস্তল ইত্যাদি দিয়ে মারধর করে এবং হত্যার হুমকি দেয়।
ফজল দেওয়ানের ছোট ভাই সিরাজুল হক অভিযোগ করে জানান, এসময় আমার কর্মচারী চিৎকার করলে অভিযুক্তরা হুমকি দিয়ে বলে, কয়েকদিন পর বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। তোর মালিক ও তোরা কেউ বাড়িতে থাকতে পারবি না। তোর মালিক যদি মামলা উঠাইয়া না নেয় তাহলে তোকেসহ তোর মালিককে সুযোগ মতো পাইলে খুন করে লাশ নদীতে ফেলে দিবো।
তিনি বলেন, শাহ আলমের দাপটে আমি ও আমার পরিবার আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। আমার ভাই হারিয়েছি তার বিচার এখনো পাইনি। এর মধ্যে খুনি চক্র আবার হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।
অভিযোগের বিষয়ে শাহ আলম হাওলাদারের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ জুলাই দুপুরে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার চরমুক্তারপুর এলাকায় চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় স্থানীয় মোশারফের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয় ফজল। একইদিন বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। এ ঘটনায় নিহতের বোন জামাই বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় দুপুরেই একটি মারামারির মামলা দায়ের করেন যা পরবর্তীতে হত্যা মামলায় রুপান্তরিত হয়। মামলায় শাহ আলম হাওলাদারের নাম না থাকলেও শুরু থেকেই ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ তার দিকেই।