মুন্সিগঞ্জ, ২৯ মে, ২০২১, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
ঘুর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়ে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মেঘনা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
ইতিমধ্যে মেঘনায় ৬টি পরিবারের বসতভিটা মেঘনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘূম রাত কাটছে ৬০টি পরিবারের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের গজন সরকারকান্দি গ্রামের মেঘনা শাখা নদীটি দিয়ে প্রবল স্রোত বইছে। নদীর পারের হত দরিদ্র সোবহান (৫০), শাহজালাল (৩৫), মহিউদ্দিন (৪৫), সবুজ (৩৫), নুরুউদ্দিন (৪৫), মো. আলী হোসেন (৪০) এর বসতভিটা ইতিমধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বসতভিটা হারিয়ে আশে পাশের আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে পরিবারগুলো। ঐ এলাকার প্রায় ৬০টি পরিবার ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘূম দিন কাটাচ্ছে। ইয়াসে পানি বৃদ্ধির পর এখন পানি কমতে শুরু করায় মেঘনা নদীতে প্রবল স্রোত বইছে। আর স্রোতের তোড়ে ধ্বসে পরছে ওই এলাকার কৃষি জমি ও বসত বাড়ি।
এ ব্যপারে ভাঙন আতঙ্কে থাকা গফুর মিয়া (৬০) জানান, ৩০ বছর ধরে মেঘনা নদীটি এই স্থান দিয়ে ভাঙছে। আমাদের বাপ দাদার বাড়িঘর কয়েক দফা ভাঙনে বিলীনের পরও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা সরকার। ভাঙনের কারনে মেঘনার যে মূল নদী ছিলো সেটি ভরাট হয়ে এখন শাখা নদীতে পরিণত হয়েছে। আর আমাদের এক সময়ের এই শাখাটি এখন ভাঙতে ভাঙতে মূল নদীতে পরিণত হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভাঙনে শিকার সোবহান জানান, এই সময়ে আমাদের বাড়িঘর নদীতে ভেঙে যাবে আমরা ভাবতেও পরিনাই। হঠাৎ করে গত মঙ্গলবার থেকে পানি বাড়তে শুরু করে বুধবার রাতে আমার বসত ভিটাটি নদীতে ভেঙে যায়। আমি ঘর বাড়ি সড়িয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আছি। এ পর্যন্ত কোন সাহয্য সহযোগিতা পাইনি।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলো জানান, প্রতিবছর বর্ষা এলেই এই অঞ্চলের মেঘনা নদীতে বাড়িঘর ও কৃষি জমি ভাঙছে। ভাঙনের শিকার হয়ে এক স্থাণ হতে পাশের স্থানে বাড়িঘর তুলে বসবাস করে আসছেন তারা। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এ অবস্থা চলে আসলেও ভাঙন রোধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা সরকার।
তারা আরও জানান, গত বুধবার আমাদের ইমামপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মনসুর আহম্মেদ খান জিন্নাহ এসে আমাদের ঘর বাড়ি নদীতে ভাঙছে দেখে গেছে। সে বলে গেছে, এখন বাশঁ পুতে বালির বস্তা ফেলে আপাতত ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিবো। কিন্তু কোন ব্যবস্থাই নিচ্ছেনা। সরকার যদি আমাদের এখানে একটি স্থায়ী বাধ নির্মাণ করে দিতো তাহলে আমরা নদী ভাঙন হতে রক্ষা পেতাম।
এ ব্যাপারে ইমামপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মনসুর আহম্মেদ খান জিন্নাহ জানান, আপাতত বাশঁ পুতে বালির বস্তা ফেলে ভাঙন রোধে চেষ্টা করা হবে। সেভাবে ব্যাবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী জানান, ওই এলাকার নদী ভাঙন বিষয়ে আমি স্থানীয় চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর রাখছি। ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।