মুন্সিগঞ্জ, ২৫আগস্ট, ২০২০, (আমার বিক্রমপুর)
খ্যাতনামা চলচ্চিত্রকার ও রাজনীতিবিদ শফি বিক্রমপুরী। বাংলা ১৩৫০ সালের ২০ আষাঢ় ( ৪ জুলাই, ১৯৪৩ ) মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার মত্তগ্রামে নানার বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন।
শফি বিক্রমপুরী এদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের অত্যন্ত সফল এবং সকলের শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব।
১৯৬৪ সালে হলিউডের বিখ্যাত ইংরেজী ছবি এঞ্জেলিক এবং ফান্টুমাস – এর মাধ্যমে তিনি পরিবেশনার কাজ শুরু করেন।
১৯৬৫ সালে দক্ষিণাঞ্চলের লোকজ প্রেমকাহিনী অবলম্বনে নির্মিত গুনাই বিবি ছবিতে একজন অংশীদার হিসেবে বিনিয়োগ করেন। এরপর কয়েকটি বাংলা এবং উর্দ্দু ছবিও তিনি পরিবেশনা করেন।
১৯৭২ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সুভাষ দত্ত পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি অরুণোদয়ের অগ্নিস্বাক্ষী পরিবেশনা করেন। একই সালের নভেম্বরে ঢাকার জোনাকী সিনেমা হলে এ ছবিটির প্রেস’শো করা হয়। সে সময়ের দেশবরেণ্য ও নন্দিত ব্যক্তিবর্গ ছবিটি দেখেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানও সিনেমা হলে বসে ছবিটি দেখেন। ছবিটি মস্কো আর্ন্তজাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হলে সেখান থেকে মেরিট অব ডিপ্লোমা পুরস্কার পায়। উলেখ্য সেসময়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়নি।
এরপর তাঁর প্রযোজনায় নির্মিত ফোক ফ্যান্টাসী যাদুর ছবি ডাকু মনসুর, বাহাদুর ও রাজদুলারী এ তিনটি পরপর সুপার হিট হওয়ায় চলচ্চিত্র অঙ্গনে চমক সৃষ্টি হয়। ১৯৭৮ সালের ২০ জানুয়ারী মুক্তিপ্রাপ্ত সম্পূর্ণ রঙ্গীন ছবি রাজদুলারী চলচ্চিত্রের মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরপর তিনি সবুজসাথী, সকাল সন্ধ্যা , মাটির কোলে , শশীপুন্নু , জজসাহেব, দেনমোহর ও অবুঝ মনের ভালোবাসাসহ অনেক জনপ্রিয় ছবি উপহার দিয়েছেন। তিনি অনেক জনপ্রিয় শিল্পী ও কুশলীকে চলচ্চিত্রে প্রথম আত্মপ্রকাশের সুযোগ করে দেন।
১৯৭৯ সালে ফেব্র“য়ারী মাসে অনুষ্ঠিত ২য় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি নির্বাচনী এলাকা নং – ১৭৮, ঢাকা-৫ (শ্রীনগর- লৌহজং) আসনে প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। নির্বাচন শেষে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আহবানে এবং সেসময়ের বিএনপির মহাসচিব অধ্যাপক ডা: এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সহযোগীতায় তিনি বিএনপিতে যোগদান করেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় পদে থেকে দায়িত্ব পালন করেন।
দীর্ঘ সময়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি ন্যায়- নীতিবান, দেশপ্রেমিক সর্বোপরী পরিচ্ছন্ন ও আদর্শবান রাজনীতিবিদ হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত।
রাজনীতির পাশাপাশি শেষ জীবনে তিনি সমাজসেবা এবং গ্রন্থ লেখায় ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। তার লেখা অত্যন্ত আলোচিত গ্রন্থ আমার দেখা ঢাকার পঁচাত্তর বছর (১৯৪৭-২০২২) চলতি বছর সূচীপত্র প্রকাশনী থেকে বের হয়েছে।