১৪ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সোমবার | সকাল ১০:৩২
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
কোরবানিতে বিক্রমপুরের যে গরুর সুনাম সারা বাংলাদেশে
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ৪ জুলাই, ২০২১, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

কোরবানিতে বিক্রমপুর তথা মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিমের ঐতিহ্যবাহী ধবল গরুর চাহিদা রয়েছে সারা বাংলাদেশে।

ধারনা করা হয়, প্রায় ২০০ বছর আগে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিম এলাকায় বিশেষ জাতের এই গরুর লালন-পালন শুরু হয়। তবে, বর্তমানে সেই ঐতিহ্য অনেকটাই হারাতে বসেছে।

বিশেষ জাতের এই গরু লালন পালন করা হয় বিশেষ যত্নে। তাই এই গরুর মাংসের স্বাদও আলাদা। পরিচ্ছন্ন ও লাবণ্যময় এই গরু দেখলে মুগ্ধ হবেন আপনিও। যেন প্রশংসা না করে পারবেননা। দেখতে আকর্ষনীয় হওয়ায় খামারিরা ধবলি গরু, মধুর মা, সুন্দরী সহ বিভিন্ন নামে ডেকে থাকেন গরুগুলোকে।

বিক্রির ৮-১০ মাস আগে থেকে গরুগুলো লালন-পালন শুরু করেন খামারিরা। প্রতিদিন খাওয়ানো হয় ১২-১৩ পদের খাবার। দিনে ৩ বেলা মইসনা খইল, নাইরকলি খইল, বুটের ভুসি, রাফ ও ১ বেলা ধানের খেড় খাওয়ানো হয় এদের। প্রতিদিন গোসল করানো হয় শ্যাম্পু, সাবান, ডিটারজেন্ট বা বিশেষ ধরনের জেল দিয়ে।

মিরকাদিমের ঐতিহ্যবাহী ধবল গরু চেনার বৈশিষ্ট্য হলো, এটির চোখের পাপড়ি, দুই কান, পায়ের খুড়া, লেজ, মুখাবয়ব ও গায়ের রং সম্পূর্ণ সাদা। এবং এদের সিংগুলো উপরের দিকে খাড়া।

মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিমের ঐতিহ্যবাহী ধবল গরু। ছবি: আমার বিক্রমপুর।

খামারিরা জানান, ঠিকমতো খাবার খাওয়ালে এই গরুর তেমন কোন রোগবালাই হয় না। সারাক্ষণই গরুর যত্নে থাকতে হয়। রাতে ধুপ জালিয়ে গরুকে মশার হাত থেকে নিরাপদ রাখা হয়। খাবার আর বিশেষ যত্নের কারনেই এই গরুর মাংস খেতে খুব বেশি সুস্বাদু।

কোরবানি আসলেই ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধনাঢ্য ব্যবসায়ীরা মিরকাদিমে এসে বিশেষ জাতের ঐতিহ্যবাহী এই গরুগুলো কিনে নিয়ে যান। বছরের পর বছর ধরে তাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে মিরকাদিমের ধবল গরু।

একেকটি গরুর ওজন হয় ১০-২০ মণ পর্যন্ত। ওজনভেদে একেকটি গরু বিক্রি হয় ৮০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫ লাখ টাকায়।

হাজী গোলাম মোস্তফা এগ্রো ফার্মের মালিক গোলাম মোস্তফা জানান, গেলো কয়েকবছর ধরে ভারত থেকে গরু আনতে না পারায় ধবল জাতের গরু উৎপাদন কমেছে মিরকাদিমে। এছাড়া প্রতিবছর কোরবানি এলেই দাম বেড়ে যায় গো-খাদ্যের। এর প্রভাবে গরু লালন পালনে খরচও বেড়ে যায় কয়েকগুন। তাই প্রতিবছরই গরু পালন ছেড়ে অন্য ব্যবসায় ঝুকছেন খামারীরা।

মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কুমুদ রঞ্জন মিত্র জানান, এই বিশেষ জাতের গরুর উৎপাদন বাড়াতে আমরা বিশেষ পরিকল্পনার কথা ভাবছি। খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে এই এলাকার খামারীদের নিয়ে কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হবে।

error: দুঃখিত!