শিহাব আহমেদঃ সরকারদলীয় রাজনৈতিক কৌশলের কারনে কার্যত অনেকটা গোপনেই চলছে মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের কাউন্সিলের প্রস্ততি। ৯ বছরে পা দেয়া বর্তমান কমিটির অনেক সিনিয়র নেতাও মনে করেন মূল দলকে সু-সংগঠিত করতেই প্রথমে তরুণদের নেতৃত্বে নিয়ে আসা উচিৎ। আর তরুণদের নিয়ে আসতে হলে ছাত্রদলকে টার্গেট করে পুনরায় ঢেলে সাজাতে হবে। এই এজেন্ডা নিয়ে সবরকমের তদবিরও করছেন উল্লেখ্য সিনিয়র নেতারা।
তবে বিগত ঈদের আগে অথবা পরে মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষনা করার কখা খাকলেও কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান কে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে জেলে পাঠালে পিছিয়ে যায় মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের কাউন্সিলের কার্যক্রম।
অন্যদিকে, মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের কাউন্সিলে সভাপতি পদের জন্য সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা হাবিবে আলম শাহরিয়ার ও প্রথমে ভারপ্রাপ্ত ও পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে সরাসরি সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা’র নাম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এরা দুজনেই সভাপতি পদপ্রার্থী বলে স্বীকার করেছেন।
মূলত, ২০০৬সালে আমিনুল ইসলাম (জসিম) কে সভাপতি ও আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল কে সাধারণ সম্পাদক করে ৮১সদস্যের জেলা কমিটি ঘোষনা করা হয়। এরপরে ২০১০সালে তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি’র দায়িত্ব গ্রহন করলে ঐ শুন্য পদে মাসুদ রানা কে মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়।
২০১৪সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’র আলোচনা সভায় জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও মুন্সীগঞ্জ সদর-গজারিয়া আসনের সাবেক সাংসদ আব্দুল হাই ও সাধারন সম্পাদক রিপন মল্লিক মৌখিকভাবে মাসুদ রানা’র ভারপ্রাপ্ত উত্তোলনের ঘোষনা দেন। এবং কেন্দ্রীয় কমিটি বরাবর সুপারিশ আকারে ভার মুক্তির ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থ্যা নেয়ার কথা্ও বলেন তারা। কিন্তু জানতে চাইলে পরে এ ব্যাপারে আদৌ কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিলো কিনা এবিষয়ে কেউই কিছু জানাতে পারেননি।
এর বাইরে জেলা শহর ছাড়া্ও গজারিয়া,টঙ্গিবাড়ি,লৌহজং এবং অন্যান্য উপজেলায় আলোচনায় রয়েছে আরও অনেক পদপ্রার্থী’র নাম। তাদের মধ্যে কেউ জেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল হাই পন্থী আবার কেউ কেউ জেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক রিপন মল্লিক পন্থী।
২০১০সালের পরে জেলার প্রতিটি ইউনিট কে গঠিত করে কমিটি ঘোষনা করা হয়। তবে ২০১৫সালে এসে দেখা যায় সেই কমিটির অনেকেই দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহন না করেই বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন। তাদের মূলদল ক্ষমতায় না থাকলেও ক্ষমতাসীন সরকারী দলের লোকদের সাথে লিয়াজু করে সমানতালে বিভিন্ন ব্যাবসায়িক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। দলের ভাষায় এর মধ্যে কেউ কেউ ’দলের দুঃসময়ে’ বিদেশে চলে গিয়েছেন।
আবার অনেকে বিদেশ গিয়েও দল থেকে সুবিধা নিয়েছেন। নিজের ছবি ও দলীয় পদবী ব্যাবহার করে ব্যানার-পোষ্টার দেখিয়ে বিদেশে বিভিন্ন দপ্তর থেকে বাড়তি সুবিধা ভোগ করেছেন।
এর ফলে জেলা-থানা কমিটি ও ঐসব ইউনিটগুলির কমিটির আদতে এই মুহুর্তে আর তেমন কোন রাজনৈতিক কার্যক্রম নেই। কমিটিগুলি দীর্ঘমেয়াদী হয়ে পড়ায় একরকম ছন্নছাড়া মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের এই অবস্থা থেকে উত্তোরনের জন্যেই এই মুহুর্তে কাউন্সিলের দাবিও জোড়ালো হচ্ছে।
কাউন্সিল সম্পর্কে বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা হাবিবে আলম শাহরিয়ার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে কোন সংগঠনকে ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত করতে গেলে কাউন্সিল এর গুরুত্ব অবশ্যই আছে। মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের যে কমিটি হওয়ার কথা রয়েছে তাতে যোগ্যরাই নেতৃত্ব হাতে পাবে বলে আমি আশা রাখি’
কাউন্সিল সম্পর্কে বর্তমান কমিটির সাধারন সম্পাদক মাসুদ রানা এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভোটের মাধ্যমে আগামী জেলা ছাত্রদলের নেতৃত্ব নির্বাচিত হলে তা সংগঠনে গতি ও শক্তি বাড়াবে। যো্গ্য নেতৃত্বের বিকাশ ঘটবে’।