মুন্সিগঞ্জ, ১৮ অক্টোবর, ২০২০, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
আবহাওয়া অনুকূল ও সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল সোমবার (১৯অক্টোবর) পদ্মা সেতুতে ৩৩স্প্যান “ওয়ান সি” বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের।
৩২তম স্প্যান বসানোর ৮দিন পর বসতে যাচ্ছে ৩৩তম স্প্যানটি। সেতুর ৩ ও ৪নং পিয়ারে স্প্যানটি বসানো হবে। এতে দৃশ্যমান হতে চলেছে সেতুর ৪হাজার ৯শ ৫০মিটার বা প্রায় ৫কিলোমিটার।
সেতু সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য প্রকৌশলী সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, আবহাওয়া অনুকূল ও সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে সকাল সাড়ে ৮টায় ৩হাজার ৬শ টন ধারণ ক্ষমতার ভাসমান ক্রেণ তিয়ানই ৩৩তম স্প্যানটি বহন করে নির্ধারিত পিয়ারের কাছে রওনা হবে। পিয়ার ৩-৪কাছে স্প্যানটি ২টি পিয়ার উপর বাসানো চেষ্টা করা হবে। তবে নদীতে স্রোতের কারণে সমস্যা তৈরি হলে ১দিন পরে অর্থাৎ ২০অক্টোবর বসানো হতে পারে।
পদ্মা সেতু সূত্রে আরো জানা গেছে, ৩৩তম স্প্যানের পরে আগামী ২৫ অক্টোবর ৭ ও ৮ নম্বর পিয়ারের ওপর ৩৪তম স্প্যান , ৩০ অক্টোবর ২ এবং ৩ নম্বর পিয়ারের ওপর ৩৫তম স্প্যান, নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ ৩৬তম স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আর আগামী ১০ডিসেম্বরের মধ্যে সকল স্প্যান বাসানোর নির্দেশনা রয়েছে সেতু সচিবের।
এদিকে কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে গত শনিবার সর্বশেষ ৪১তম স্প্যানের ফিটিংয়ের কাজ শেষ হয়। এটি পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যান। ৪১তম স্প্যান ২এফ নম্বর পদ্মা সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারের ওপর বসানো হবে। এছাঢ়া ৩৩তম স্প্যান সহ ৬টি স্প্যানের রংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। রংয়ের কাজ বাকি আছে ৩টি স্প্যানের। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩২টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৪ হাজার ৮শ মিটার অংশ। ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সব কটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে।