মুন্সিগঞ্জ, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
করোনার ঠিক অল্প কিছুদিন আগে দেশে এসেছেন কিন্তু করোনার কারনে আর বিদেশে যেতে পারেননি মুন্সিগঞ্জের এরকম প্রবাসীর সংখ্যা অসংখ্য।
গত ১ এপ্রিল থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ৩ লাখ ২৬ হাজার ৭৫৮ জন প্রবাসী কর্মী দেশে ফিরে এসেছেন। মুন্সিগঞ্জে এর সংখ্যা কত তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি।
তবে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস বলছে, তাদের কাছে ৪ হাজার ২০০ জনের মত তথ্য আছে। তবে সংখ্যাটা আরও বেশি হবে।
আজ আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে কথা হয় এরকম অনেকের সঙ্গে।
এর মধ্যে বেশি সমস্যায় পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা। তাদের অনেকে দেশেই বিভিন্ন উপায়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন আর কেউ এখনো বেকার অবস্থায় দিনযাপিত করছেন। তাদের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে।
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার প্রবাসী সাদ্দাম হোসেন (৩২) জানান, তিনি ১৩ বছর যাবৎ মালয়েশিয়া থাকেন। মাসে সেখানে ৬০-৭০ হাজার টাকা বেতন পেতেন। দীর্ঘদিন পর গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে এসেছিলেন এরপর আটকে গেছেন। তিনি যেই কোম্পানিতে কাজ করেন সেখান থেকে তাকে বলা হয়েছে কাজ বন্ধ, এখন আসতে হবে না।
তিনি বলছেন, ‘বিদেশে যাওয়ার টাকা বড় ভাই জোগাড় করে দিছিলো। বিদেশে কামানো আমার জমানো সব টাকা আমার বড় ভাই আটকে দিয়েছে। এখন বাধ্য হয়ে কিস্তি করে মিশুক কিনে চালাচ্ছি।’
সাদ্দাম বলেন, ‘মিশুক কিনেও শান্তি নেই। এলাকার লোকজন ভেংচি মারে। আবার এই শুনি রং করাতে হবে, টাকা লাগবে। দুইদিন পরপর হ্যান লাগে ত্যান লাগে। সবকিছু বুঝিও না। আবার প্রতিদিন মোড়ে মোড়ে চাদাঁবাজি তো আছেই।
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার ভট্রাচায্যের্ বাগ এলাকার সাজ্জাদ হোসেন শাকিল (২৭) জানান, দুই বছর তিনি মালয়েশিয়াতে ছিলেন। করোনার কারনে কাজ কমে যাওয়ায় সেপ্টেম্বরে তিনি দেশে ফিরে এসেছেন। এখন তার সংসারে অনেকটা লড়াই করে টিকে থাকতে হচ্ছে। গত দুই মাস যাবৎ তিনি বেকার। কোনও কাজও করছেননা।
মুন্সিগঞ্জ জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলছেন, করোনা মহামারির প্রভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক সংকট ও অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। এর মধ্যে অনেক দেশের অনেক কোম্পানি আপাতত শ্রমিকদের ফিরিয়ে নিতে চাইছে না। শ্রমিকরা পড়েছেন সংকটে। তবে সরকার করোনায় আটকে পড়া বেকারদের জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে দেশে ফিরে আসা কর্মীদের সহায়তার পাশাপাশি মহামারী পরবর্তী পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ কর্মী তৈরিতে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার।