শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও সরকারি হিসাব এমনটাই বলছে। দেশে আমদানি করা সব মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেটের গড় মূল্য এক হাজার টাকা ৭৫ টাকা। গত তিন বছরে আমদানি করা প্রতিটি ফিচার এবং স্মার্ট সব ধরণের ফোনের গড় মূল্য হিসাব করে বিস্ময়কর এ তথ্য পাওয়া গেছে।
দেশের বাজারে বর্তমানে এক হাজার টাকার কাছাকাছি মূল্যের ফোন যেমন রয়েছে, তেমনি ৭০ হাজার টাকা মূল্যের হাইএন্ড ফোনও রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুসারে তিন বছরে দেশে সব মিলে ছয় কোটি ৩০ লাখ তিন হাজার ৮১৮টি হ্যান্ডসেট আমাদানি হয়েছে। এসব ফোন সেট শুল্কায়নের সময় দেখানো মূল্য অনুসারে মোট দাম দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৭৭৩ কোটি ৮৯ লাখ ৩১ হাজার ৬৭৪ টাকা।
সে হিসাবে গড়ে একেকটি হ্যান্ডসেটের গড় মূল্য এক হাজার ৭৫ টাকার ভিত্তিতে শুল্ক পেয়েছে এনবিআর। আপাত দৃষ্টিতে এটি মোটেও বাস্তবসম্মত নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টদের মতে, শুল্ক ফাঁকি দিতেই আমদানিকারকরা ফোনের দাম কম দেখার পথ বেছে নিযেছেন। দেশের বাজারে এক হাজার টাকা দামের ফিচার বা বেসিক ফোন থাকলেও বর্তমানে এগুলোর পরিমান কম। সবচেয়ে সস্তায় ফোন কিনতে গেলেও দেড় হাজার টাকা পড়ে।
আর সাম্প্রতিক সময়ে ফিচার ফোনের চেয়ে স্মার্টফোনের বিক্রি বাড়ছে। আড়াই হাজার টাকায় কিছু মডেলের স্মার্টফোন পাওয়া গেলেও সেগুলোর সংখ্যা খুবই কম। স্বল্প বাজেটের স্মার্টফোন কিনতেও ব্যয় হয় চার হাজার টাকার বেশি। আর হাইএন্ড ফোনের দাম ২৫ হাজার টাকার বেশি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, বৈধ পথে আমদানিতে আগের ১১ শতাংশ শুল্ক থাকলেও ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে তা বাড়িয়ে ২১ শতাংশ করা হয়েছে।
এ কারণে বৈধ পথে আমদানির সময় ফোনের মূল্য কম দেখানো হচ্ছে। কেননা বেশি দাম দেখালে করও বেশি দিতে হয়। সে কারণে আমাদিন করা হ্যান্ডসেটের মূল্য কম দেখানোর প্রবণতাও কাজ করছে বলে তাদের ধারণা।
একই কারণে বৈধ পথে আমদানির পরবির্তে চোরাচালান ও লাগেজ পার্টির মাধ্যমে দেশে বেশি ফোন আসছে বলে অনেকের ধারণা।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে সব মিলে হ্যান্ডসেট আমাদানি হয়েছে ২ কোটি ৫৯ লাখ ৯৫ হাজার। এর আগের বছর হয়েছিল ২ কোটি ১ লাখ এবং ২০১২-১৩ অর্থবছরে এ পরিমান ছিল ১ কোটি ৯৬ লাখ ৬০ হাজার।