মুন্সিগঞ্জ, ২০ অক্টোবর, ২০২০, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের লৌহজং প্রান্তে পদ্মা সেতু আরও দৃশ্যমান হয়েছে।
পদ্মা সেতুতে ৩৩স্প্যান “ওয়ান সি” বসানো সম্পূর্ন হয়েছে। সোমবার বেলা ১২টায় সেতুর মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ৩ ও ৪নং পিয়ারে স্প্যানটি বসানো হয়। এতে দৃশ্যমান হলো সেতুর ৪হাজার ৯শ ৫০মিটার অর্থাৎ প্রায় ৫কিলোমিটার।
৩২তম স্প্যান বসানোর ৮ দিন পর বসানো হলো ৩৩তম স্প্যানটি। পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মোঃ আব্দুল কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, আবহাওয়া অনকূল ও সবকিছু ঠিকঠাক থাকায় মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে সকাল সাড়ে ৮ টায় ৩ হাজার ৬শ টন ধারণ ক্ষমতার ভাসমান ক্রেণ তিয়ানই ৩৩তম স্প্যানটি বহন করে নির্ধারিত পিয়ারের কাছে রওনা হয়। এরপর পিয়ার ৩-৪কাছে ক্রেণটি পৌছে পজিশন অনুযায়ী ইঞ্চি মেপে স্প্যানটি উপর বাসানো হয়। এতে সময় লাগে আরো কয়েক ঘন্টা। বেলা ১২টায় স্প্যানটি বসানোর কাজ শেষ হয়।
পদ্মা সেতু সূত্রে আরো জানা গেছে, আগামী ২৫ অক্টোবর ৭ ও ৮ নম্বর পিয়ারের ওপর পরবর্তী ৩৪তম স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও ৩০ অক্টোবর ২ এবং ৩ নম্বর পিয়ারের ওপর ৩৫তম স্প্যান, নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ ৩৬তম স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আর আগামী ১০ডিসেম্বরের মধ্যে সকল স্প্যান বাসানোর নির্দেশনা রয়েছে সেতু সচিবের।
এদিকে কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে গত শনিবার সর্বশেষ ৪১তম স্প্যানের ফিটিংয়ের কাজ শেষ হয়। এটি পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যান। ৪১তম স্প্যান ২এফ নম্বর পদ্মা সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারের ওপর বসানো হবে। এছাঢ়া ৩৩তম স্প্যান সহ ৬টি স্প্যানের রংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। রংয়ের কাজ বাকি আছে ৩টি স্প্যানের। বাকি থাকা ৮টি স্প্যান সেতুর পাওয়া প্রান্তে বসবে। ইতিমধ্যেই জাজিরা প্রান্তে সবগুলো স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩৩টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৪ হাজার ৯শ ৫০মিটার মিটার অংশ। ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সব কটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে।