আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মুন্সিগঞ্জ সদর থেকে ‘চেয়ারম্যান’ পদের জন্য লড়তে চান এস এম মাহতাব উদ্দিন কল্লোল (৫৫)। মুন্সিগঞ্জ শহরের শ্রীপল্লী এলাকার আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা শামছুল হকের ছেলে কল্লোল শহর থেকে তৃণমূল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের কাছে সজ্জন ব্যাক্তি ও সফল সংগঠক হিসেবে পরিচিত।
মুন্সিগঞ্জ শহরের প্রভাবশালী এই রাজনৈতিক নেতা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মুন্সিগঞ্জ সদর থেকে ‘চেয়ারম্যান’ পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা প্রসঙ্গে মুন্সিগঞ্জ শহরের শ্রীপল্লীতে তার নিজ বাসায় বসে কথা বলেছেন ‘আমার বিক্রমপুর’ এর সঙ্গে।
মাহতাব উদ্দিন কল্লোল জানিয়েছেন, ১৯৮৪ সালে মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তার রাজনৈতিক পথচলা শুরু। এর দুই বছর পরই ১৯৮৬ সালে তিনি একই সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পান। এরপর ১৯৯১ সালে ছাত্রলীগ থেকে তিনি সরাসরি দায়িত্ব পান আওয়ামী লীগের। মুন্সিগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পরবর্তীতে তাকে দায়িত্ব দেয়া হয় মুন্সিগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের।
কল্লোল ‘আমার বিক্রমপুর’ কে বলেন, ২০০৩ সালে তাকে যখন মুন্সিগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় তখন রাজনৈতিক পরিবেশ পুরোপুরি আওয়ামী লীগের বিপরীতে ছিলো। মুন্সিগঞ্জ শহরে তখন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করার মত লোক ছিলোনা । আওয়ামী লীগের জন্য সেটা ছিলো এক নতুন পরিস্থিতি।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা সহ বিদেশী মুদ্রা লুট করে তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী। আমাকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিতে আমার ব্যাবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা করে মালামাল নিয়ে যায় তারা। শুধু এগুলো করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি। আমাকে তারা সিটি ব্যাংকের এসিস্ট্যান্ট ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে চাকরিচ্যুত করে। আমি অর্থনৈতিকভাবে পুরোপুরি ভেঙে পড়ি।
কল্লোল বলেন, ‘আমি ঐসময়ে এত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও যেটা করতে চাইনি সেটা হচ্ছে আপোষ করা।’
রাজনৈতিক জীবনে সবচেয়ে কষ্টের মুহুর্ত উল্লেখ করে কল্লোল বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কারনে প্রায় ২৫০ টি মামলা ছিলো। মাসের পর মাস বিনা অপরাধে জ্বেল খেটেছি। সর্বশেষ রাজনৈতিক কারনে জ্বেল খেটেছি ২০০২ সালে একটানা ২৮ দিন। তাতেও কোনদিন খারাপ লাগেনি। তবে ১৯৮৬ সালে আমার সাথে ঘটে যাওয়া একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা আমি আজও ভুলতে পারি না। আমি তখন জ্বেলে ছিলাম। হঠাৎ করে আমার কাছে সংবাদ এলো আমার গর্ভধারিনী মা চেমন আরা বেগম মারা গেছেন। জ্বেলে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যুর সংবাদে আমি এতটাই ভেঙ্গে পড়ি যে, আমি সেই দৃঃষহ স্মৃতি আজও ভুলতে পারি না। আমার মায়ের মৃত্যুর পরে আমাকে মাত্র ৩ ঘন্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয়। আমি জ্বেল থেকে এক বুক চাপা কষ্ট নিয়ে মায়ের জানাজা দিয়ে আবার জ্বেলে ফেরৎ যাই’
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ‘চেয়ারম্যান’ পদে প্রতিদ্বন্দিতা প্রসঙ্গে মাহতাব উদ্দিন কল্লোল বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী। দলের প্রতি আমার অগাথ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। আমি মনে করি আমি দলের মনোনয়ন ও সমর্থন পাবো। আমি দলীয় মনোনয়ন নিয়ে চেয়ারম্যান পদের জন্য লড়তে চাই।’
‘আমার বিক্রমপুর’ এর সঙ্গে চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহতাব উদ্দিন কল্লোল এর আলাপের কিছু অংশের ভিডিওঃ