মুন্সিগঞ্জ, ২৬ মার্চ, ২০২৩, নিজস্ব প্রতিবেদক (আমার বিক্রমপুর)
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হলেন মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের সন্তান নূহ উল আলম লেনিন। দলের বিভিন্ন পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পর ২০১৬ সাল থেকে আর কোনো পদে ছিলেন না লেনিন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আবারও দলে স্থান পেলেন নূহ উল আলম লেনিন।
নূহ-উল-আলম লেনিন ১৯৪৭ সালে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার রাণীগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা স্কুলশিক্ষক আবদুর রহমান মাস্টার ছিলেন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, কৃষক আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। মা মোমেনা খাতুন ছিলেন কৃষক আন্দোলনের কর্মী।
গতকাল শনিবার এ–সংক্রান্ত চিঠি পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন নূহ উল আলম লেনিন। লেনিন বলেন, দলের আনুষ্ঠানিক কোনো দায়িত্ব যখন ছিল না, তখন আওয়ামী লীগের মুখপত্র উত্তরণ সম্পাদনা করেছেন তিনি। এখন উপদেষ্টা পরিষদে অন্তর্ভুক্তির ফলে দলীয় কাজে আরও সম্পৃক্ততা বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সই করা চিঠি শনিবারই পাঠানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুসারে, উপদেষ্টা পরিষদ হচ্ছে দলের ‘থিঙ্কট্যাংক’। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ে দলকে পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেবে এই পরিষদ। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিষয়েও দলের সভাপতিকে পরামর্শ দেওয়ার কথা উপদেষ্টাদের। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সংখ্যা ৫১। তবে এই সংখ্যা দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা বৃদ্ধি করতে পারবেন।
নূহ-উল-আলম লেনিন ১৯৭৩ থেকে ৭৬ সাল পর্যন্ত ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত তিনি ছিলেন কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং অবিভক্ত সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য।
১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগের যোগ দেওয়ার পর তাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়। পরবর্তীতে তিনি দলটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, পরের সম্মেলনে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হন। ২০১২ সালে তাঁকে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করা হয়। ২০১৬ সালে তিনি বাদ পড়েন।
১৯৯৮ সালের ২৪ এপ্রিল সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন- এর প্রতিষ্ঠা করেন নূহ-উল-আলম লেনিন। এর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠা করেছেন বিক্রমপুর জাদুঘর, বঙ্গীয় গ্রন্থ জাদুঘর ও জ্ঞানপীঠ স্বদেশ গবেষণা কেন্দ্র। সংরক্ষণ করেছেন বিক্রমপুরের ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ি।
তাঁর উদ্যোগে পরিচালিত প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা ও উৎখননে বিক্রমপুরে আবিস্কৃত হয়েছে নবম-দশম শতাব্দীর বৌদ্ধ বিহার, বৌদ্ধ মন্দির কমপ্লেক্সসহ বেশ কিছু প্রত্নত্ত্বাতিক নিদেশন। বেরিয়ে এসেছে বিক্রমপুর বিহার, নাটেশ্বর বৌদ্ধ বিহার। তিনি প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান- ঐতিহ্য অন্বেষণ-এরও অন্যতম ট্রাস্টি এবং ভারপ্রাপ্ত সভাপতি।