আজ ২২শে শ্রাবণ। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে ৮০ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে চির প্রস্থান করেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এরপর বহুকাল অতিক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু বাঙালির প্রতিটি আবেগ আর সূক্ষ্ম অনুভূতিকে স্পর্শ করে আছেন বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ এ কবি।
বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে তার সাহিত্য। বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সঙ্গীতের ভুবনকে বহুমাত্রিক অবদানে সমৃদ্ধ করা বিশ্বকবির ৭৪তম মহাপ্রয়াণ দিবস আজ বাইশে শ্রাবণ।
রবীন্দ্র প্রয়াণ দিবসে বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) তাকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করবে বাঙালি জাতি।
১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। তার এ প্রাপ্তি বাংলা সাহিত্যকে বিরল গৌরব এনে দেয়।
কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ জন্মগ্রহণ করা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজ কর্মের মাধ্যমে সূচনা করে গেছেন একটি কালের। একটি সংস্কৃতির। কৈশোর পেরোনোর আগেই বাংলা সাহিত্যের দিগন্ত বদলে দিতে শুরু করেন তিনি। তার পরিণত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিণত হয়েছে বাঙালির শিল্প-সাহিত্য।
বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্য সঙ্কলন প্রকাশিত হয়েছে।
তার সর্বমোট ৯৫টি ছোট গল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সঙ্কলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে।
রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। ভারত-শ্রীলঙ্কারও জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা তিনি। একজন গীতিকারের একসঙ্গে তিনটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের জাতীয় সঙ্গীত রচনার উদাহরণ পৃথিবীতে আর একটিও নেই।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমি বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় একাডেমির শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে একক বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। ‘যুদ্ধ এবং বিশ্ব শান্তি’ প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখবেন অধ্যাপক ড. বেগম আখতার জামান।
কবিগুরুর প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে সারাদেশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। ২২ শ্রাবণ উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করবে।
এ উপলক্ষে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে। বিভিন্ন চ্যানেলের আয়োজনে উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে থাকছে নাটক, টকশো, কবিতা আবৃত্তি, সঙ্গীতানুষ্ঠান, প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ইত্যাদি।
বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন স্যাটেলাইট টেলিভিশন ও বেতার বিশেষ অনুষ্ঠানমালা ও নাটক প্রচার করবে।