৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | সন্ধ্যা ৭:৫০
আর চিঠি নয়, এবার ‘অ্যাকশন’: ইসি
খবরটি শেয়ার করুন:

পৌর নির্বাচনে বিধি ভঙ্গ ঠেকাতে ‘অসহায়’ নির্বাচন কমিশন এবার সরাসরি ‘অ্যাকশন’ দেখানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেছেন, সংসদ সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আচরণবিধি ভঙ্গের জন্যে আর কোনো চিঠি দিয়ে সতর্কতার সময় নেই। এখন সরাসরি ‘এ্যাকশন’ নেওয়া হবে।

ভোটের এক সপ্তাহ আগে বুধবার শেরেবাংলা নগরে ইসি সচিবালয়ে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা বলেন তিনি।

ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের আচরণবিধি ভঙ্গে ইসির ভূমিকা নিয়ে বিএনপির সমালোচনা এবং ইসিকে ‘মেরুদণ্ডহীন’ আখ্যায়িত করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের বক্তব্যের পরদিনই এই হুঁশিয়ারি এল।

৩০ ডিসেম্বরের এই নির্বাচনে মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের এমপিদের বিধি ভঙ্গের বেশ কয়েকটি ঘটনা গণমাধ্যমে এলেও ইসি শো-কজ নোটিস দেওয়া ছাড়া আর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

এমপিদের বিধি ভঙ্গে সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে শাহওনেওয়াজ বলেন, “এখন আর চিঠির বিষয় নয়, অ্যাকশনের বিষয়।

“এখন যে সময় রয়েছে চিঠি-চুঠির বিষয় থাকবে না; এখন সরাসরি রিটার্নিং অফিসারকে বলেছি, ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে তারা সরাসরি অ্যাকশন নেবে।”

আচরণবিধি ভঙ্গের ব্যাপক অভিযোগ উঠলেও এই নির্বাচন কমিশনার বলছেন, দু-একটি ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ ঘটেছে।

“নির্বাচনের পারিপার্শ্বিক অবস্থা আমাদের বিপক্ষে চলে গেছে, একথা মোটেও সত্য নয়। এখনও আমাদের কাছে যে রিপোর্ট আছে-দুয়েকটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে; ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এসব বিষয় আমাদের দৃষ্টিগোচরে আসছে। সঙ্গে সঙ্গে রিটার্নিং অফিসারকে নির্দেশও দিচ্ছি।”

রিটার্নিং কর্মকর্তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছে কি না, তার খোঁজ-খবরও নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

“গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরও শো-কজ করার ব্যবস্থা করছি। আচরণবিধি ভঙ্গ করলে যত বড় লোকই হোক, ক্ষমতাশালীই হোক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।”

এমপিদের বিধি ভঙ্গে কোনো ছাড় না দেওয়ার ঘোষণাও দেন তিনি।

“সংসদ সদস্য হোক বা অন্য কেউই হোক; যদি কেউ এখন আচরণবিধি ভঙ্গ করে বা মানতে অপারগতা প্রকাশ করেন, আমাদের আদেশ এবং নির্দেশ সবার প্রতি, যাতে সাথে সাথে অ্যাকশন নিয়ে নেওয়া হয়।”

নিজেদের ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহারেরও ইঙ্গিত দিলেন এ নির্বাচন কমিশনার।

“গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যক্তি প্রার্থীর পক্ষে কাজ করলে সে প্রার্থীর বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আমাদের কাছে এ ধরনের রিপোর্ট আছে-প্রার্থীকে সহায়তা করছে বা সহয়তা নিচ্ছে প্রার্থী; তেমন ঘটনা ঘটলে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করে দেব।”

আচরণবিধি লঙ্ঘনে প্রার্থিতা বাতিলের পাশাপাশি সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ছয় মাসের দণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। দলকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার ক্ষমতা রয়েছে ইসির।

‘সহায়তা চাওয়া অসহায়ত্বের কারণ নয়’

পৌর ভোটে সাংসদদের বিধি ভঙ্গ রোধে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চাওয়ায় অসহায়ত্বের প্রকাশ ঘটেনি বলে মনে করেন নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ।

তিনি বলেন, “সংসদ সদস্যরাও যদি বিধি ভঙ্গ করে থাকে এ জন্যে ইতোমধ্যে আমি সরকার প্রধানের (সহায়তা) কথা বলেছি।

“সুষ্ঠু করার জন্যে দেশের সবার সমর্থন আশা করতে পারি। এ জন্যে আমরা চেয়েছিলাম, সরকার প্রধানের কথা বলেছিলাম। উনি নিশ্চয় খেয়াল করবেন।”

সেই সঙ্গে যারা বিভিন্ন দায়িত্বে থাকবেন তারাও যেন সহায়তা করেন- সে প্রত্যাশা করেন শাহনেওয়াজ।

“ইসির একার পক্ষে নির্বাচন করা সম্ভব না। সবাই সম্মিলিতভাবে করবে। সবাই সহযোগিতা করবে আইনগতভাবে। কারও কাছ থেকে সহায়তা চাওয়াটা নির্বাচন কমিশনের ভুলের কারণ না বা অসহায়ত্বেরও কারণ নয়।”

error: দুঃখিত!