অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের বিরুদ্ধে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মসদগাঁও কালি মন্দিরে ঢাকা থেকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে স্থানীয় আওয়ামীলীগ।
শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীর আলোচনা সভা মঞ্চ দখলের চেষ্টার প্রতিবাদে মুন্সিগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাটর্নি জেনারেলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনে সোমবার দুপুরে লৌহজং উপজেলা আওয়ামীলীগ অফিসে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন লৌহজং উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান ওসমান গণি তালুকদার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বেপারী ও উপজেলা আওয়ামীলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান।
সংবাদ সম্মেলনে ওসমাণ গণি তালুকদার বলেন, রোববার বিকেলে মসদগাঁও কালিমন্দিরে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম ফক্কুসহ বিএনপি-জামায়াতের ১০-১২ জন ঢাকার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে যোগদান করে এবং কৃষ্ণের ছবি সরিয়ে তাঁর (মাহবুবে আলমের) ছবি ব্যানার টাঙায়। এতে হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এসময় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হলে তারা হট্টগোল সৃষ্টি করে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান পণ্ড করে দেয় এবং হিন্দুদের ভয়ভীতি দেখায়।
অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, আওয়ামীলীগের ভেতরে কোন বিএনপি-জামায়াতের অনুপ্রবেশ ঘটাবেন না, আমরা তা বরদাশত করবো না। আওয়ামীলীগের স্বার্থে, বঙ্গবন্ধুর স্বার্থে, শেখ হাসিনার স্বার্থে আপনি বিএনপি-জামায়াতের ওপর ভর করবেন না।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্য বক্তারা বলেন, সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি ১৯৯৬ সালে সংরক্ষিত আসনে এমপি হওয়ার পর থেকে তিনি লৌহজংয়ে আওয়ামীলীগকে সংগঠিত করেছেন। এখন বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ট হিসেবে চক্রটি সাজানো-গোছানো আওয়ামীলীগকে ধ্বংস করার চক্রান্ত করছে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, লৌহজং উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম মৃধা, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শেখ আনোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক (০১) রুহুল আমিন মোড়ল, সাংগঠনিক সম্পাদক (০২) আবু ফয়সাল লিপু ফকির, লৌহজং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ মোল্লা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাসার মোল্লা, মেদেনীমন্ডল ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন খান, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি জুলহাস বেপারী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আলমগীর কবীর খান, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান খান সাজু, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ওমর ফারুক রাজীব, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম শাওনসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এই অভিযোগ অস্বীকার করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে আমি উপস্থিত হই এবং শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান চলছিলো। এ সময় সংসদ সদস্য এমিলির নেতৃত্বে লোকজন এসে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করে। এতে অনুষ্ঠানের শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, রোববার বিকেল চারটার দিকে মসদগাঁও কালিমন্দিরে স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি ও মাহবুবে আলম জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলে দুইপক্ষের লোকজনের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। এরপর জন্মাষ্টমীর র্যালিসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়।