মুন্সিগঞ্জ, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩, শেখ আছলাম, শ্রীনগর (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলা জুরে অলিতে-গলিতে বাজারে অথবা রাস্তা-ঘাটে এমনকি গ্রামের মেঠোপথে ভ্যানে বহণ করে নানা রকম সুরে তাল মিলিয়ে হাক ডাক দিয়ে বিক্রি হচ্ছে হরেক রকমের প্লাস্টিক ও বিভিন্ন সামগ্রী।
মাদারীপুর, ময়মনসিংহ, ঝালকাঠি ও বগুড়া এবং অন্যান্য জেলা থেকে প্রায় শতাধিক হকার শ্রীনগরে ভাড়া থেকে হরেক রকম সামগ্রীর ব্যবসা করে যাচ্ছেন বলে তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
ফরিদপুরের সরিষাবাড়ির ইসমাঈল সকাল হলেই গ্রামের পর গ্রাম ছুটে চলেন। এভাবেই দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছর পেরিয়ে গেলেও হরেক রকমের মালের বিকিকিনি শেষ নেই।
ঢাকা চকবাজার ও নারায়ণগঞ্জ থেকে পাইকারি দামে হকাররা এসব সামগ্রী ক্রয় করে গ্রামগঞ্জে খুচরা দামে বিক্রি করেন।
ইসমাইল আরও বলেন, ২০০২ সাল থেকে ছোট পরিসরে অটো ভ্যানের ওপর তৈরি করা ভ্রাম্যমাণ দোকানে নিত্য প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র সাজিয়ে নিয়ে তা ফেরি করে বিক্রি করেন তিনি। সময় পেরোলেও ভাগ্যোর সুদিন ফিরে আসেনি। প্রায় দুই যুগ ধরে ধরে এসব পণ্য সামগ্রী বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। তার ভ্রাম্যমাণ দোকানে পাওয়া যায় পাতিল, প্লাস্টিকের বাটি, ডালা, লবণদানি, বদনা, টুল, বটি, বাচ্চাদের খেলনা ও কসমেটিক্সসহ প্রায় ১০০ প্রকারের জিনিস।
দাম হাতের নাগালে থাকায় গ্রাম গঞ্জে সব শ্রেণীর লোকজন হরেক রকমের সামগ্রী ক্রয় করে থাকেন। বিশেষ করে ছোট ছোট বাচ্চাদের খেলনার চাহিদা বেশি। গৃহিনীদের চাহিদাও কম নয়। রান্নাঘরের টুকটাক জিনিসপত্র বাজারে না গিয়েই বাড়ির পাশেই পেয়ে যাচ্ছেন তারা।
আরও একজন হকার জানান, এ ব্যবসায় বেচাকেনা আগে ভালোই হইতো। জিনিসপত্রের দাম কম ছিল, বিক্রিও বেশী হইতো। এখন জিনিসপত্রের অনেক দাম তারপর বহু দিনের এই পেশাটা ছাড়তে মন চায় না। বয়স হয়ে গেছে, যদি ব্যবসা ছেড়ে দেই এই বয়সে কোন কাম করতে পারবোনা। তার অধিকাংশ ক্রেতাই গ্রামের মহিলা। যারা কেনাকাটার জন্য বাজারে যায় না। তারাই তার কাছ থেকে নানা জিনিসপত্র কিনে থাকেন। অন্যান্য ব্যবসার মতো তাকেও খরিদদারদের বাকি দিতে হয়। তবে তিনি লোক চিনে বাকি দেন।
রোদ-বৃষ্টি, গরম-শীত এসব উপেক্ষা করে সংসার ও পেটের দায়ে যুগ পেরিয়ে গেলেও মায়ার টানে অনেক হকার শ্রীনগর উপজেলায় রয়ে গেছেন। অনেক হকার মোটামুটি ভালো থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে এখানে বসবাস করছেন।