মুন্সিগঞ্জ, ১৭ এপ্রিল ২০২৩, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জে অটো ছিনতাই মামলার তদন্তে গিয়ে ধরা পরলো ফেনিতে আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী অর্জুন চন্দ্র ভাদুরী হত্যাকান্ডে জড়িত দুইজনসহ অটো-মিশুক ছিনতাই চক্রের ৭ জন। এ যেন কেঁচো খুড়তে গিয়ে বের হলো সাপ।
গেল ১০ এপ্রিল মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলার যশলং ইউনিয়নের বরইতলা এলাকা থেকে দিঘীরপাড় মূলচর এলাকার লতিফুর রহমান আশিকের অটোতে যাত্রী বেশে উঠে ছুরি ঠেকিয়ে অটোটি নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। পরে টংগিবাড়ী থানায় অভিযোগ করেন আশিক। অভিযোগ তদন্তের ভার পরে জেলা গোয়েন্দা পুুলিশের উপর।
গোয়েন্দা পুলিশ তদন্তে নেমে অটো ছিনতাইয়ে জড়িত মোকসেদ বেপারিসহ স্বর্ণ ব্যবসায়ী ভাদুরী হত্যায় জড়িত ২ জন, আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ২ সদস্য, আন্তঃজেলা অটোরিকশা ছিনতাইকারী চক্রের ৩ সদস্যসহ সর্বমোট ৭ জনকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুুলিশ। উদ্ধার করা হয় ছিনতাই হওয়া ৩ টি অটো।
গতকাল রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান আল মামুন এসব তথ্য জানান।
পরে বিকালে আটককৃতদের মধ্যে ৫ জন পৃথক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পুলিশ সুপার জানান, রোববার সকালে টংগিবাড়ীর লতিফুর রহমান আশিকের অটোটি লৌহজংয়ের খিদিরপাড়া এলাকার মোকছেদ বেপারির কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। এর আগে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী ভাদুড়ি হত্যাকান্ডে জড়িত লক্ষীপুর জেলার মনির হোসেন (৩২) এবং অটোচুরি চক্রের সদস্য মুন্সিগঞ্জ জেলার জাহাঙ্গীর (৩৯) ও অহিদ (৪৫) কে আটক করে ডিবি। আটককৃতদের আদালতে প্রেরণ করে রিমান্ডে আনা হলে ডাকাত দলের সদস্য মনিরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ফেনি জেলার সোনাগাজি উপজেলার ভাদুড়ী জুয়েলার্সের মালিক অর্জুন চন্দ্র ভাদুড়ীকে (৫৭) প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা করে ৪০ ভরি স্বর্ণা ডাকাতির ঘটনায় জড়িত রুবেল হাওলাদার (৩৩) কে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের নিমতলা থেকে আটক করা হয়। পরে রুবেলের দেয়া তথ্য অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে অটো-মিশুক ছিনতাই চক্রের আরও কয়েক সদস্যের তথ্য। সর্বশেষ শনিবার মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থেকে রুবেল ওরফে নয়ন আহম্মেদ ওরফে রাসেল (৩২) ও ওমর ফারুককে (২৬) সিরাজদিখান ও টংগিবাড়ী থানায় ছিনতাই হওয়া দুইটি অটোসহ আটক করা হয়।
চক্রটি ঈদকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু মহাসড়কসহ মুন্সিগঞ্জের আরও বিভিন্ন জায়গায় অটো-মিশুক ছিনতাই ও বড় ধরনের ডাকাতির চেষ্টা করছিলো বলে জানান পুলিশ সুপার।
গ্রেপ্তারকৃত আসামি মোকছেদ বেপারীর বিরুদ্ধে ১টি হত্যা মামলা, মনিরের বিরুদ্ধে ১টি খুন সহ ডাকাতি মামলা, ১টি হত্যা মামলা ও ২টি চুরি মামলা সহ মোট ৪ টি মামলা, রুবেল হাওলাদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় ৪টি ডাকাতি মামলা, ১টি খুন সহ ডাকাতি মামলা ও ২টি ডাকাতির প্রস্তুতি মামলা সহ মোট ৭টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আদিবুল ইসলাম (ক্রাইম এন্ড অপারেশন), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থান্দার খায়রুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) ইয়াসিন ফেরদৌস, জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ওসি আবুল কালাম আজাদ, সদর থানার ওসি মো. তারিকুজ্জামান প্রমুখ।