২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শনিবার | রাত ২:১২
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
মুন্সিগঞ্জে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ ৯ অক্টোবর, ২০১৯, সদর প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

সরকারের বহুমুখী উদ্যোগের ফলে পেঁয়াজের বাজারে সরবরাহ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, পাইকারি বাজারগুলো এখন দেশি-বিদেশি পেঁয়াজে ভরপুর। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মূল্যও কমেছে কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা। কিন্তু এর কোনও প্রভাব পড়েনি মুন্সিগঞ্জের খুচরা বাজারে। নিয়ন্ত্রণ নেই মুন্সিগঞ্জের পেঁয়াজের খুচরা বাজারগুলোয়। এখনও পাইকারি ও খুচরাবাজারে পেঁয়াজের মূল্যের ব্যবধান প্রতি কেজিতে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মুন্সিগঞ্জের খুচরা বাজার থেকে মহল্লার মুদি দোকান—কোথাও পেঁয়াজের সংকট নেই। ক্রেতাদের অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের তদারকি না থাকায় এই নৈরাজ্য। মুন্সিগঞ্জের খুচরা বাজারে মঙ্গলবারও (০৮ অক্টোবর) প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫ থেকে ১০০ টাকায়। আর ভারত ও মিয়ানমার থেকে আসা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা দরে। 

মুন্সিগঞ্জ শহরের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই-তিন দিনের ব্যবধানে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের মূল্য কমেছে কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা। একইসঙ্গে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে।  তবে, বিক্রেতাদের অভিযোগ, এখন প্রতিদি বাজারে যে হারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ছে, সে হারে ক্রেতা বাড়ছে না। এর ফলে মূল্য কমিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। সুতরাং পচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

এদিকে, মুন্সিগঞ্জের রিকাবীবাজার বাজার, মুক্তারপুর ফেরিঘাট, সিপাহীপাড়া বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৭৫-৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও কোথাও কোথাও বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিপাহীপাড়া বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আবুল হোসেন, মুক্তারপুর ফেরিঘাট বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মিলন রহমান ও রিকাবীবাজার বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আলী হোসেন দাবি করেন, তারা বেশি মূল্যে কিনেছেন। তাই মূল্য কমানো সম্ভব নয়। কম মূল্যে কেনা পেঁয়াজ কম মূল্যে বিক্রি করবেন, তখন কোনও সমস্যা হবে না বলেও তারা জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তারপুর ফেরিঘাট বাজারে বাজার করতে আসা একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক সানজিদা আক্তার বলেন, ‘টিভিতে দেখি পেঁয়াজের মূল্য নাকি কমেছে। কোথায় কমেছে? আজও তো ভারতীয় পেঁয়াজ কিনলাম ৮০ টাকা কেজি দরে।’ তিনি বলেন, ‘সরকারি লোকজন বাজারে আসে না বলেই খুচরা ব্যবসায়ীরা এত নৈরাজ্য করার সাহস পান।’ 

এদিকে, নিষেধাজ্ঞার আগে এলসি করা পেঁয়াজ ছেড়েছে ভারত। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুর থেকে শনিবার (৫ অক্টোবর) পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে মোট ৫৭টি ট্রাকে ৯০০ ৪৬ মেট্রিক টন ও শনিবার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করেছে ১০৮ ট্রাকে ২ হাজার ২০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ। এসব পেঁয়াজ শনিবার ৩৫ টাকা থেকে মানভেদে ৪৫ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। একইসঙ্গে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের মূল্যও কমেছে। প্রতিদিনই বর্ডার ট্রেডের মাধ্যমে আসছে শত শত কেজি পেঁয়াজ।  

রাজধানীর পেঁয়াজের পাইকারি আড়ত শ্যামবাজার ও কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫-৮০ টাকায়। দুই দিন আগেও যা ছিল ১০৫ টাকা। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০-৭৫ টাকা, মিয়ানমার ও তুরস্কের পেঁয়াজ ৬৮-৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। অথচ খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৯০-১১০ টাকা, বিভিন্ন দেশ থেকে আনা পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়। এই খবরে রাতারাতি খুচরা ও পাইকারি বাজারে হু-হু করে পেঁয়াজের মূল্য বাড়তে থাকে। পরদিন সব ধরনের পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে ১০৫ টাকা এবং খুচরা বাজারে ১৩০ টাকায় ওঠে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খুচরা বাজারেও মূল্য কমবে। সরকার নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’ কেউ কারসাজি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

error: দুঃখিত!