১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | সকাল ১০:৪১
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
মুন্সিগঞ্জে পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ২০০ ওয়েল্ডিং কারখানা
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জে পরিবেশ ছাড় পত্র ছাড়া প্রায় ২০০ ওয়েল্ডিং কারখানা চলছে। আর এসব কারখানা সচল রাখতে অবাধে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে যাচ্ছে মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

আইনের বাস্তবায়ন না থাকায় মুন্সিগঞ্জে একের পর এক অবৈধ ওয়েল্ডিং কারখানা গড়ে তুলছেন ব্যবসায়ীরা।

পরিবেশ ও কলকারখানা অধিদপ্তরের আইন না মেনে গড়ে তোলা এসব কারখানার আলোকরশ্মির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে স্থানীয়রা। এ ছাড়া পরিবেশের উপরও পড়ছে বিরূপ প্রভাব। অবৈধ এসব ওয়েল্ডিং কারখানার সৃষ্ট উচ্চ শব্দ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষণ ও জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করে চলেছে। এসব কারখানাগুলো প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই পরিবেশ ছাড় পত্র ছাড়াই চলছে। আবার এসব কারখানায় নেই- কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের লাইসেন্স। তার পরেও টাকার বিনিময়ে মিলছে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ। চলছে তাদের সকল কার্যক্রম।

এদিকে জেলায় ছোট-বড় সব মিলিয়ে মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যুৎ সংযোগে চলছে সাড়ে তিনশ’র বেশি ওয়েল্ডিং কারখানা। এ তথ্য দিয়ে নিশ্চিত করেন এজিএমএ মোক্তার হোসেন। কারখানগুলোর মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড় পত্র নিয়েছে ১শ’ ২৩টি ওয়েল্ডিং কারখানা।

এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৭টি, টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় ১০টি, গজারিয়া উপজেলায় তিনটি, সিরাজদিখান উপজেলায় ২৯টি, লৌহজং উপজেলায় আটটি এবং শ্রীনগর উপজেলায় ৪৬টি করে মোট ১শ’ ২৩টি ওয়েল্ডিং কারখানা গড়ে উঠেছে।
আর অন্য কারখানাগুলো প্রতিষ্ঠা কাল থেকে নেই পরিবেশ ছাড় পত্র। এসব কারখানার নিবন্ধন করা হয়নি কলকারখানা অধিদপ্তরের কাছ থেকে। নিবন্ধন ও ছাড় পত্রবিহীন বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে চলছে ওয়েল্ডিং এর কাজ। আইনের প্রয়োগ না থাকায় রীতিমতো প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে রাস্তার দুই পাশ দখল করে দোকানের বাক্স, গ্রিলের দরজা-জানালা ইত্যাদি দিয়ে ফুটপাত দখল করে রাখছেন ব্যবসায়ীলা। এতে পথচারীদের চলাচল বিঘ্ন ঘটছে। ফুটপাত দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের অভিযান না থাকায় তারা দখলের প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে।

এসব বিষয়ে কলকারখানা ও পতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক মোসাম্মদ জুলিয়া জেসমিন বলেন, ওয়েল্ডিং কারখানরগুলোর কোনটিই কলকারখানা ও পতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের লাইসেন্স নেই। ওয়েল্ডিং ব্যবসায়ীরা নিজেদের মতো কর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালাছে। তবে আমরা তাদেরকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শক অধিদপ্তরের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছি।

এ প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তর সিনিয়র কেমিস্ট মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, আমাদের সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও পল্লী বিদ্যুতের একটি সমঝোতা স্বাক্ষর রয়েছে। এতে ওয়েল্ডিং কারখানার বিদ্যুতের সংযোগ নিতে হলে পরিবেশের লাইসেন্স নিতে হবে। পরিবেশ ছাড় পত্র ব্যতীত সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগ পাবে না।

এ ব্যাপারে মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. মাহবুব রহমান বলেন, ওয়েলডিং কারখানায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পরিবেশ অধিদপ্তরে ছাড় পত্র লাগে না। সে ক্ষেত্রে আমরা বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারি। তিনি আরও বলেন, রেড ক্যাটাগড়ি কারখানায় আমরা পরিবেশ ছাড় পত্র ছাড়াই বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারি না। রেড ক্যাটাগড়ি কারখানার কথা জানতে চাইলে সে বলেন, ক্যামিকেল জাতীয় কারখানা। যেখানে আগুন লাগার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু ওয়েন্ডিং কারখান এর মধ্যে পড়ে না।

এদিকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও পল্লী বিদ্যুতের সঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানছে না (পিডিবি)।

আর (পিডিবি) ও পল্লী বিদ্যুতের উদাসীনতার কারণে জেলার ৬০ শতাংশ ওয়েল্ডিং ব্যবসায়ীর পরিবেশের লাইসেন্স নেই। আর এ কারণে পরিবেশের ছাড় পত্র নিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন ওয়েল্ডিং ব্যবসায়ীরা।

error: দুঃখিত!