২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | সকাল ১১:২৩
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
বর্ষায় সিরাজদিখানের অর্থনীতি সচল রাখে শাপলা!
খবরটি শেয়ার করুন:

জাতীয় ফুল শাপলা। এটি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি তরকারি হিসেবে এটি খেতেও সুস্বাধু।

কেউ খায় সখ করে, আবার কেউ খায় অভাবে পড়ে। অভাবগ্রস্ত বা নিতান্ত গরিব লোকজন এ বর্ষা মৌসুমে জমি থেকে শাপলা তুলে তা দিয়ে ভাজি বা ভর্তা তৈরি করে আহার করে থাকেন। আর শহরে লোকজন সখে এ মৌসুমে ২-৪ দিন শাপলার তরকারি বা ভাজি খেয়ে থাকেন।

আর সেই জীবন্ত শাপলা বিক্রি করে এখন জীবিকা নির্বাহ করছে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শত শত পরিবার।

কৃষি জমি পানির নিচে থাকায় এ মৌসুমে কৃষকের তেমন কোনো কাজ নেই। তাই এলাকার অনেক কৃষক বর্তমানে এ পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। এ পেশায় কোনো পুঁজির প্রয়োজন না হওয়ায় বিভিন্ন বয়সের লোক এ পেশায় অংশ নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। শাপলা সাধারণত তরকারি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

এ বর্ষায় সিরাজদিখান উপজেলার ডুবে যাওয়া বিভিন্ন ইরি, আমন ধান ও পাট ক্ষেতে শাপলা ব্যাপকভাবে জন্মেছে। এছাড়াও এলাকার ইছামতি খালে শাপলা ফুল ফুটেছে সৌন্দর্য আর নয়নাভিরাম দৃশ্য নিয়ে।

শাপলা ফুল সাধারণত জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে শুরু করে কার্তিক মাস পর্যন্ত পাওয়া যায়। তবে মৌসুমের শেষ অর্থাৎ কার্তিক মাসে তেমন পাওয়া যায় না।

এলাকার শাপলা সংগ্রহকারী কৃষকরা ভোর থেকে নৌকা নিয়ে ডুবে যাওয়া জমিতে ও বিলে ঘুরে ঘুরে শাপলা সংগ্রহ করতে শুরু করে এবং শেষ করে দুপুরের দিকে।

লতব্দী ইউনিয়নের চর নিমতলার বিল থেকে শাপলা সংগ্রহকারী রবিউল ইসলাম জানান, এ সময়ে একেক জনে কমপক্ষে ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ মোঠা (৬০ পিস শাপলায় ১ মোঠা ধরা হয়) সংগ্রহ করতে পারে। পাইকাররা আবার সংগ্রহকারীর কাছ থেকে এসব শাপলা সংগ্রহ করে একত্রে করে। সিরাজদিখানের রসুনিয়া, ইমামগঞ্জ ও তালতলায় শাপলার পাইকারি ক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। পাইকাররা এখান থেকে শাপলা ক্রয় করে রাতে ঢাকার যাত্রাবাড়ি পাইকারি বাজারে বিক্রি করে থাকেন।

উপজেলার চরনিমতলী গ্রামের পাইকার বাবুল খান জানান, শাপলা সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার মোঠা শাপলা ক্রয় করে থাকেন। সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে এক মোঠা শাপলা ১০ টাকা দরে ক্রয় করেন। তারপর গাড়ি ভাড়া গড়ে ৩ টাকা, লেবার ১ টাকা, আড়ৎদারি খরচ ২ টাকাসহ মোট ১৭ থেকে ১৮ টাকা খরচ পড়ে । যাত্রাবাড়ী আড়ৎ এ শাপলা বিক্রি করে ২৫ থেকে ২৭ টাকা করে মোঠা।

শাপলা তরকারি হিসেবে খুবই মজাদার একটি খাদ্য। গত কয়েক বছর যাবৎ এ ব্যবসাটি এলাকায় বেশ প্রসার লাভ করেছে। এ থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে এখন অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করে সংসার চালাচ্ছেন।

error: দুঃখিত!