১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | দুপুর ১২:০৬
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমানোটা কী ক্ষতিকর?
খবরটি শেয়ার করুন:

আধুনিক জীবনে ঘুমের সময় ও সুযোগ দুটোই অনেক কম। অনিদ্রায় ভুগতে ভুগতে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকেই ঘুমের ওষুধ খাওয়া শুরু করেন। অনেকে সন্ধ্যার দিকে কফি পান করে ঘুমের দেখা পান না, কেউ ফোন বা ল্যাপটপ ঘাঁটতে ঘাঁটতে রাত ভোর করে ফেলেন। এসব ক্ষেত্রে মনে হতেই পারে যেহেতু প্রেসক্রিপশন লাগে না, তাই হালকা একটা ঘুমের ওষুধ খাওয়াই যেতে পারে! কিন্তু ঘুমের ওষুধ খাওয়ার আগে বেশকিছু বিষয় জেনে রাখা উচিত আপনার। কারণ এসব ওষুধ কিছু কিছু ক্ষেত্রে হতে পারে ক্ষতিকর।

যেসব ওষুধ প্রেসক্রিপশন ছাড়া খাওয়া যায়, সেগুলো সাধারণত মোটামুটি নিরাপদই হয়। তবে এক্ষেত্রেও ঘুম ঘুম ভাবের প্রতি নজর রাখুন। আপনি যে ঘুমের ওষুধটাই খান না কেন, পরের দিন সকালে বা সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব থাকতে পারে। এই প্রভাবের কারণে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই ঘুমের ওষুধ খেয়ে গাড়ি বা বড় কোনো যন্ত্র পরিচালনা করা ঠিক নয়।

ঘুমের ওষুধ খেতে হবে সন্ধ্যারাতে, ঘুমাতে যাওয়ার আগে। ঘুম হচ্ছে না বলে মাঝরাতের দিকে ঘুমের ওষুধ খাওয়া যাবে না, এতে পরদিন ঘুম ঘুম ভাব রয়ে যাবে। আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন, শিশুকে বুকের দুধ পান করান বা লিভারের সমস্যা থাকে, তাহলে কোনো ওষুধই ডাক্তারের সাথে আলোচনা না করে খাওয়া উচিত নয়। এসব অবস্থা ছাড়াও এজন সুস্থ মানুষের উচিত ঘুমের ওষুধ খাওয়ার আগে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা-

আপনি ইতোমধ্যেই কোনো ওষুধ খেতে থাকলে ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করুন ঘুমের ওষুধ এই ওষুধের কাজে বাধা দেবে কিনা
কখনোই ঘুমের ওষুধের সাথে অ্যালকোহল খাবেন না
কম ডোজে খাওয়া শুরু করুন নয়তো ঘুম ভাব কাটবেনা
বাচ্চার ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কখনোই তাকে ঘুমের ওষুধ দেবেন না
ঘুমের ওষুধ খেয়ে আসক্তি তৈরি হবে না বটে, কিন্তু তা লম্বা সময় নিয়মিত খাওয়া যাবে না এটাও সত্যি। তা করলে ঘন ঘন ঝিমুনি, বিভ্রান্তি, স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা, মুখের ভেতরে শুকিয়ে যাওয়া ও মুত্রত্যাগে সমস্যা দেখা দিতে পারে। আপনি যদি অনেকদিন ধরে অনিদ্রায় ভুগে থাকেন তাহলে ডাক্তার দেখানো উচিত ও এটা কোনো বড় সমস্যার লক্ষণ কিনা তা বের করা উচিত।

সাধারণত প্রেসক্রিপশন ছাড়া যেসব ঘুমের ওষুধ পাওয়া যায় তার বেশিরভাগই অ্যান্টিহিস্টামিন। এগুলো লম্বা সময় ধরে ব্যবহার করলে ঘুম ঘুম ভাব, মাথা ঘোরা, স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা ও মুখের ভেতরে শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা হতে পারে। তাই লম্বা সময় ব্যবহার করা যাবে না।

অ্যান্টিহিস্টামিন ছাড়াও আরেক ধরনের ঘুমের ওষুধ পাওয়া যায়, তা হলো মেলাটোনিন। মেলাটোনিন আসলে আমাদের মস্তিষ্কে প্রতিদিন তৈরি হয়। এর পরিমাণ রাত্রে বাড়ে, ফলে আমাদের ঘুম আসে। আর সকালে কমে যায়, ফলে ঘুম দূর হয়ে যায়। ঘুমের ওষুধ হিসেবে মেলাটোনিন আসলে ঘুম না আনলেও ঘুমের সময় ঠিক করে। অনেকের রাত্রে ঘুম আসে না, সকালের দিকে ঘুম আসে। রাত্রে মেলাটোনিন খেলে ঘুমের সময়টা একটু একটু করে ঠিক হয়ে আসে।

কিন্তু ঘুম ঠিক করার জন্য আসলে ঘরোয়া উপায়ই চেষ্টা করা উচিত আগে। ঘুম ও অন্তরঙ্গ সময় ছাড়া বিছানায় অন্য কিছু করা যাবে না। বিছানায় বসে ঘুমানো, ফোন ব্যবহার করা এমনকি না ঘুমিয়ে শুধু শুধু শুয়ে থাকা যাবে না। কিছু কাজ করতে পারেন-

প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান ও ঘুম থেকে উঠুন
বিছানায় যাওয়ার আগে ক্যাফেইন, অ্যালকোহল ও ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন
প্রতিদিন শরীরচর্চা করুন
ফোন ব্যবহার করবেন না ঘুমানোর আগে
ব্লু লাইট চশমা ব্যবহার করতে পারেন
ধ্যান, টাই চি বা ইয়োগা অনুশীলন করতে পারেন।
সূত্র: গুড হাউজকিপিং

error: দুঃখিত!